Read Time:4 Minute, 31 Second

করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার সময় একদল শিল্পী প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝপথে ৭৫ ফুটের একটি নৌকায় আটকে পড়ে। দীর্ঘ ১০ মাস তারা সাগরে ভাসছে।

ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে হঠাৎ করেই দেশে দেশে সমুদ্র সীমানা বন্ধের ঘটনা ঘটতে শুরু করে। রোববার বিবিসি জানায়, ওই শিল্পী দল টাইফুন মৌসুম শুরুর আগে নিরাপদ আশ্রয় পাবে কিনা কোনো নিশ্চয়তা নেই।

দুই সংগীত শিল্পী, আলোক ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারসহ সাত নাবিক গত আগস্টে নেদারল্যান্ডস থেকে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলেন। জলবায়ু সংকট এবং মহাসাগর সম্পর্কে বার্তা দিতেই তারা নৌকায় মাল্টিমিডিয়া পারফরম্যান্স করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

ইন্দোনেশিয়ার গ্রে ফিলাস্টাইন এবং নোভা রুথ বিশ্বজুড়ে সংগীত উৎসবে পারফর্ম করেছেন। তারা জাপানিজ সুর ও সমসাময়িক সংগীতের অনন্য মিশ্রণ বাজিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

পরিবেশ ও সামাজিক ন্যায়বিচারকে কেন্দ্র করেই তাদের গান। তারা সিয়াটেলের একটি বাড়ি বিক্রি করে নৌকা কিনেছিল। এতে যোগ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ক্রু সদস্য ক্লেয়ার ফসেট, সারাহ লুইস পেইন, একজন মেক্সিক্যান বেঞ্জামিন, এক স্প্যানিশ এবং এক পর্তুগিজ নাবিক।

২১ ফেব্রুয়ারি যখন নাবিকরা আরকা কিনারি (নৌকা) নিয়ে মেক্সিকো ত্যাগ করেছিলেন তখন তারাও সবার মতো করোনাভাইরাস সম্পর্কে অবগত ছিলেন। কিন্তু এটি ভয়াবহ হয়ে উঠবে এ ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না।

ছয় সপ্তাহ পরে হাওয়াইয়ের কাছে পৌঁছলে তারা একটি রেডিও সঙ্কেত পায়। জানতে পারে কুক, ক্রিসমাস এবং মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের মতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোর সমস্ত সীমানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

যাত্রা শুরুর আগে তারা প্ল্যান বি তৈরি করেছিল। যেমন- সোমালিয়ার জলদস্যুতা এবং ইয়েমেনের যুদ্ধ এড়াতে তাদের রুটের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছিল। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা ছিল না।

হাওয়াইয়ে থাকাকালে তারা দেশে দেশে লকডাউন জারির খবর পেয়েছে। ৬ মে তারা যেভাবেই হোক ইন্দোনেশিয়ার দিকে যাত্রা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

তাদের ধারণা ছিল, জুনে টাইফুনের মৌসুম শুরুর আগেই সীমানা খুলে যাবে। তা না হলে তারা কোথায় যাবে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই।

তিন সপ্তাহ পরে এখন তাদের টাটকা খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের পর্যাপ্ত শুকনো খাবার রয়েছে। নৌকায় সৌরচালিত পরিশোধন সরঞ্জামের জন্য পানীয় জলের কোনো সমস্যা নেই। সমুদ্রের মাছ ধরে ধরে খাচ্ছে তারা।

তারা এখন প্রায় ১৩ ডিগ্রি অক্ষাংশে যাত্রা করছে। তারা কোনো বৃত্তাকার ঝড়ের আভাস দেখলে দক্ষিণে যাত্রা করবে। উদ্বেগজনকভাবে নৌকার নেভিগেশন সিস্টেমটি ভেঙে গেছে। এজন্য তারা আইফোন দিয়ে নেভিগেট করছে।

তারা জুলাইয়ের প্রথমদিকে ইন্দোনেশিয়ার পানিতে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে। তাদের আশা, ততক্ষণে তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন ট্রাম্প
Next post হাঁটু গেড়ে ক্ষমা চাইলেন পুলিশ অফিসাররা
Close