Read Time:5 Minute, 26 Second

করোনাভাইরাসের সংকট সত্ত্বেও ঘড়ির কাঁটা থেমে নেই। চলতি বছরের শেষেই ব্রেক্সিট কার্যকর হবার কথা। তার আগে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভবিষ্যৎ সম্পর্ক সম্পর্কে বোঝাপড়া না হলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে।

এরই মধ্যে দুই দফা আলোচনায় তেমন অগ্রগতি হয়নি। জুন মাসের মধ্যে বোঝাপড়া না হলে ২০২১ সালে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট অনিবার্য হয়ে উঠবে।

সোমবার থেকে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনায়ও অগ্রগতির আশা ক্ষীণ হয়ে উঠেছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
সোমবার থেকে তৃতীয় দফার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হচ্ছে। শেষ হবে শুক্রবার। অবশ্যই করোনা সংকটের কারণে দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুখোমুখি হচ্ছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়েনের (ইইউ) পক্ষের প্রধান ব্রেক্সিট মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন। তার মতে, ব্রিটেনের সরকার এই আলোচনাকে ষথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না।

উল্লেখ্য, জুন মাসে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনাও ব্যর্থ হলে ব্রিটেনের সামনে দুটি পথ খোলা থাকবে। হয় ব্রেক্সিট-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার মেয়াদ আরও বাড়াতে হবে এবং সেই সময় কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অথবা চুক্তি ছাড়াই ২০২১ সালের ১লা জানুয়ারি ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে।

চলতি বছর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট কার্যকর হলেও ব্রিটেনের মানুষ এখনো তার প্রভাব টের পাচ্ছেন না। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায়ে ব্রিটেন এখনো ইইউ’র শুল্ক ইউনিয়নের অংশ রয়েছে। ইইউ’র বিধিনিয়ম মেনে ইইউ-বাজেটেও নিজস্ব চাঁদা দিয়ে চলেছে ব্রিটেন। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পণ্যের সরবরাহে কোনো বাধা সৃষ্টি হচ্ছে না।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস শনিবার এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ‘হার্ড ব্রেক্সিট’-এর ঝুঁকি বেড়ে চলেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তার মতে, ব্রেক্সিট চুক্তির সঙ্গে যে রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করা হয়েছিল, ব্রিটেন সেটি থেকে যেভাবে দূরে সরে যাচ্ছে তা দুশ্চিন্তার বিষয়।

ইইউ সেই ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে এক সার্বিক বোঝাপড়ার পথে এগোতে চাইলেও ব্রিটেন তা মেনে নিতে অস্বিকার করছে বলে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন। ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যসহ কোনো বিষয়ে মতপার্থক্য দূর করা যাচ্ছে না। তার উপর ব্রিটেনের সরকার বর্তমান ব্যবস্থার মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ছে, বলেন মাস।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেন, যে ইইউ করোনা সংকটের মোকাবিলা করতে ব্যস্ত। ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হলে সেইসঙ্গে বছরের শেষে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ধাক্কাও সামলাতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে ছয় মাস ধরে প্রস্তুতির সময় পাওয়া যাবে।

এর আগেও এমন অবস্থার আশঙ্কায় ফ্রান্সসহ একাধিক দেশে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ও শুল্ক আদায়ের অবকাঠামোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, বেশ কিছু মহড়াও চালানো হয়েছে। ২০২১ সালে সেই পরিস্থিতি সত্যি বাস্তব হয়ে পড়লে ব্রিটেন ও ইইউ’র মধ্যে যানচলাচলের গতি অনেক কমে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, বরিস জনসনের সরকার যে কোনো মূল্যে চলতি বছরের শেষেই পুরোপুরি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর। এমনকি জুন মাসে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ব্যর্থ হলেও অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে না বলে সরকার জানিয়েছে। জুনের শেষ পর্যন্ত সরকারের হাতে সেই সুযোগ থাকবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post লকডাউন শিথিল করে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘায়িত করছে সরকার : রিজভী
Next post অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আর নেই
Close