Read Time:5 Minute, 46 Second

বিদেশের মাটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে ‘নো লস নো প্রফিট’ নীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশ সৌদি আরবেই রয়েছে লাল সবুজের পতাকাবাহী ৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে কিছু চলছে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে জাতীয় কারিকুলামে আবার কিছু ব্রিটিশ কারিকুলামে।

নানা চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে বর্তমানে স্কুলগুলোতে ১০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছেন। ইতিপূর্বে স্কুলগুলোর নানা সংকটে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ দূতাবাস। বর্তমান বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে নতুন সংকটের জন্ম হয়েছে স্কুলগুলোতে। একদিকে শিক্ষক-কর্মচারীসহ ভবন ভাড়ার টাকার চাপ অন্যদিকে অভিভাবকরা বেকার হয়ে পড়ায় মাসিক টিউশন ফি পরিশোধে অপারগতা। এই অবস্থায় বিদ্যালয়গুলো বাঁচাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয় কারিকুলামে পরিচালিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ রিয়াদের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোসতাক আহমেদ বলেন, আমরা গভীর সংকটে আছি। সবকিছু বন্ধ থাকলেও আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাস চালিয়ে চাচ্ছি। বিশেষ ফান্ড থেকে শিক্ষকদেরকে ফেব্রুয়ারি এবং মার্চের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। অভিভাবকদের অবস্থাও ভালো না। এই অবস্থায় সরকারের বিশেষ বরাদ্ধ ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কমপক্ষে ৬ মাস শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যায় তার জন্য একটা বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান মোসতাক আহমেদ।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা প্রণোদনা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবের বাংলাদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানিয়ে স্কুলগুলোকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকরা।

অভিভাবকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে নিজের সংসারের খরচ চালানো দায় হয়ে পড়েছে তখন স্কুলের বেতন পরিশোধের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের চাপে অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই মুহূর্তে স্কুলের বেতন পরিশোধ করা প্রায় অসম্ভব তাই এই বিষয়ে দূতাবাস এবং সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

মোহাম্মদ আবুল বশির নামে একজন অভিভাবক বলেন, এই আপদকালীন সময়ে যদি সরকারের পক্ষ থেকে স্কুলগুলোকে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হতো তাহলে কোমলমতি সন্তানদের পড়াশুনা নিশ্চিত হতো।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন, প্রতিষ্ঠানটির ভবন ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা খরচ হয়। এজন্য অভিভাবকদেরকে বেতন পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানান ব্রিটিশ কারিকুলামে পরিচালিত রিয়াদের বাংলা স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ডা: এহসানুল হক।

করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে সবকিছু বন্ধ বেশিরভাগ প্রবাসীরা বেকার হয়ে ঘরে অবস্থান করছেন। অনেক প্রবাসী অভিভাবক ইতিমধ্যে জানিয়েছেন তাদের পক্ষে কোন ধরনের ফি প্রদান করা সম্ভব নয়। কিন্তু একাডেমিক কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকরা পরিচালনা করে আসছে। প্রতিমাসে এসব শিক্ষক শিক্ষিকা কর্মচারীর বেতন প্রদান করতে হচ্ছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এতদিন অভিভাবকদের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হয়ে আসছিল কিন্তু বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং করোনাভাইরাসে আগামীতে আরও কয়েক মাস এর প্রভাব থাকবে ফলে একদিকে যেমন প্রবাসীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে অন্যদিকে সরকারি সহায়তা না পেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ভালো স্বামী প্রমাণ দিচ্ছেন সৌম্য
Next post চীনের ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আছে: পম্পেও
Close