করোনা ভাইরাসের আক্রমণে থমকে গেছে নারা বিশ্ব। এর ভয়ঙ্কর থাবায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকাও।
দেশটিতে ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৭০৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫০ হাজার ২৪৩ জনের।
দেশটিতে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করোনার পরীক্ষামূলক ওষুধ ‘রেমডেসিভির’গ্রহণকারী রোগীরা দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন বলে দাবি করেছিলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। করোনা সারাতে বেশ কাজে আসবে রেমডেসিভির, এমন আশাই করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ধাক্কাটা এল প্রথম পরীক্ষার পরেই। করোনা রোগীদের শরীরে রেমডেসিভির ওষুধের প্রথম ট্রায়াল ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্টের সূত্র ধরে ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, করোনা আক্রান্তদের এই ওষুধ খাইয়ে নাকি বিশেষ কোনও ফল দেখা যায়নি।
রেমডেসিভির ওষুধের নির্মাতা সংস্থা গিলেড সায়েন্স জানিয়েছিল ৫ হাজার ৫০০ রোগীর উপরে এই ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। সেই ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে আনেনি সংস্থা। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি রিপোর্টে এই ওষুধের ব্যর্থতার কথা সামনে চলে আসে। সূত্রের খবর, মানুষের শরীরে এই ওষুধের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করছিলেন চীনের বিজ্ঞানীরা। সেখান থেকেই খবর আসে রেমডেসিভির করোনা আক্রান্তদের শরীরে তেমনভাবে কার্যকরী হয়নি। এই ওষুধ খাওয়ানোর পরেও রোগীদের সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।
গবেষণার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৩৭ জন রোগীর উপরে ট্রায়াল করে দেখা হয়েছে এই ওষুধ। ১৫৮ জনকে রেমডেসিভির খাইয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল, বাকি ৭৯ জনকে ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। দেখা গেছে, রেমডেসিভির যারা খেয়েছিলেন তাদের শারীরিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। আবার কয়েকজনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে।
করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এখন পর্যন্ত কোনও অনুমোদিত ওষুধ নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কার্যকরী ওষুধ নিয়ে গবেষণা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটস অব হেলথও বেশ কয়েকটি ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে। এরই একটি হলো রেমডেসিভির ওষুধ। গিলেড সায়েন্সেস-এর তৈরি এ ওষুধটি ইবোলার বিরুদ্ধে পরীক্ষা করা হলেও এতে সফলতা এসেছিল খুবই কম। তবে বিভিন্ন পশুর শরীরে চালানো বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় দেখা গেছে কোভিড-১৯, সার্স ও মার্সসহ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সংক্রমণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় এ ওষুধ কার্যকরী। ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, রেমডেসিভির ওষুধটির করোনায় কাজ করার সম্ভাবনা আছে।
২০১০ সালে এই অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ তৈরি করে গিলেড সায়েন্স। তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছিল, রেমডেসিভির নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ। সার্স ও মার্স ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কিছুটা হলেও কাজে এসেছিল এই ড্রাগ। চারজন করোনা আক্রান্ত রোগীর উপর এই ড্রাগের প্রভাব কার্যকরী হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছিল সংস্থার পক্ষ থেকে। যদিও তখনই এই ওষুধ ব্যবহারে সবুজ সঙ্কেত দিতে পারেনি গিলেড সায়েন্সেস। পরে, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে একটি গবেষণার রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, রেমডেসিভির ভাইরাসের বৃদ্ধি ও বিস্তার আটকাতে পারে। ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা সঙ্কটাপন্ন রোগীদের উপরেও কাজ করতে পারে এই ড্রাগ।
More Stories
সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ ‘চোর’ সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিপু: সিদ্দিকী নাজমুল
হোম আজকের সর্বশেষ খবর বিশেষ সংবাদ করোনাভাইরাস সম্পাদকীয় জাতীয় রাজধানী সারাদেশ রাজনীতি বিশ্ব সংবাদ খেলা বিনোদন অর্থনীতি টেক শিক্ষা স্বাস্থ্য...
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানাতে আগামী ৪৮...
আগামী এক দশকের মধ্যে পঞ্চগড়ের একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন : সারজিস
আগামী এক দশকের মধ্যে পঞ্চগড়ের একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। শুক্রবার...
১৫ বছর একটি দস্যু পরিবারের শাসন ছিল: গার্ডিয়ানকে ড. ইউনূস
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ এবং সেসময় দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...
শেখ হাসিনার শাসনামলের নৃশংসতা নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ ড. ইউনূসের
ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত সকল নৃশংসতার সঠিক নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...
‘জুলাই শহীদ’ ও ‘জুলাই যোদ্ধা’রা মার্চ থেকে ভাতা পাবেন: প্রেস সচিব
আগামী মার্চ মাস থেকে ‘জুলাই শহিদ’দের পরিবার ও ‘জুলাই যোদ্ধা’রা ভাতা পাওয়া শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার...