দুনিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৮২ হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ সময় ৮ এপ্রিল বুধবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ তথ্য জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৮৪টি দেশ ও অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৪৩৭। এরমধ্যে ৮২ হাজার ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিন লাখ ৭৬৭ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট তিন লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৮৯৩ জনের। তবে মৃতের হিসাবে শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ১২৭। আর আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৬ জন।
মৃতের হিসাবে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৫। মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৪১ হাজার ৯৪২।
মৃতের সংখ্যায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৭০ জন। এরমধ্যে ১০ হাজার ৩৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ইরানে মারা গেছে যথাক্রমে ছয় হাজার ১৭১ এবং তিন হাজার ৮৭২ জন।
উৎপত্তিস্থল চীনে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ৩৩৭। যদিও দেশটির বিরুদ্ধে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপনের অভিযোগ রয়েছে। উহানের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, ‘বুদ্ধি-বিবেচনাসম্পন্ন যেকোনও মানুষ এই সংখ্যা (সরকারি পরিসংখ্যান) নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবেন।’
করোনাভাইরাসের মহামারি এখনও সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে পৌঁছায়নি বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের মতো সংঘাত কবলিত দেশগুলোতে সংক্রমণ শুরু হলে পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘ভাইরাসটি দেখিয়ে দিয়েছে কত দ্রুত তা সীমান্ত পার হতে পারে, দেশ বিধ্বস্ত করে দিয়ে জীবন কেড়ে নিতে পারে।’ করোনা মহামারি মোকাবিলায় দরিদ্র দেশগুলোকে আরও বেশি সহায়তা দিতে উন্নত দেশ এবং বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
স্বনামধন্য মার্কিন বুদ্ধিজীবী নোম চমস্কি বলেছেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগে এ ব্যাপারে বিপুল তথ্য বিশ্বের কাছে ছিল। তখন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে এই ভাইরাসের মহামারি ঠেকানো যেত। তবে মুনাফাবাজ ও দায়িত্বহীন রাজনৈতিক ও বাজার-ব্যবস্থার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে করোনার চেয়েও বড় দুই বিপদ আসছে। এর একটি হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা, অপরটি সম্ভাব্য একটি পরমাণু যুদ্ধ।
More Stories
পেন্টাগন থেকে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথি ফাঁস
ইসরায়েলে ১ অক্টোবর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনার নথির সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও...
হামাসপ্রধান সিনওয়ার নিহতের গুঞ্জন, খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে...
বাংলাদেশিসহ সব শান্তিরক্ষীকে সরিয়ে নিতে বললেন নেতানিয়াহু
লেবাননে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্বরত সব সেনাকে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। রোববার...
ইয়েমেনে সম্মিলিত বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
ইয়েমেনের হোদেইদাহ বিমানবন্দর, সানা এবং ধামার সিটিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত টেলিভিশন চ্যালেন...
মুসলিমদের শত্রু এক: খামেনি
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, আমরা যদি এক হতে পারি...
ইসরাইলকে আরও কঠোর জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরাইল যদি ‘সর্বনিম্ন ভুল’ করে তাহলে তেহরান নিশ্চিতভাবে আরও ‘শক্তিশালী এবং কঠোর প্রতিক্রিয়া’...