Read Time:6 Minute, 46 Second

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উদযাপনের ক্ষণগণনা (কাউন্টডাউন) শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয়ভাবে শুক্রবার বিকালে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে মুজিব বর্ষের কাউন্টডাউন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও সকল পাবলিক প্লেসে একইসঙ্গে কাউন্টডাউন শুরু হয়। এদিন সারা দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের ২৮টি পয়েন্টে, বিভাগীয় শহরগুলো, ৫৩ জেলা ও দুই উপজেলা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীতে মোট ৮৩টি পয়েন্টে কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হয়।

২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মগ্রহণের শততম বছর পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই জন্ম শতবর্ষ উদযাপন করবে। বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে একটি বাস্তবায়ন কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, আওয়ামী লীগের গত সরকারের ১০ জন মন্ত্রী, বর্তমান সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, ঢাকার দুই মেয়র, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুজন সাবেক গভর্নর, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতিনিধি এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীকে রাখা হয়েছে এই কমিটিতে।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড.কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তিনি জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকায় রয়েছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড.কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন স্বদেশের বুকে ফিরে আসেন। যেহেতু ১০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক দিন, তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন এই ঐতিহাসিক দিনেই শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন।

কামাল চৌধুরী জানান, কাউন্টডাউনের জন্য বিভাগীয় শহরগুলিতে বিভিন্ন জনসমাগমের জায়গায়, সারা দেশে জেলা, সিটি করপোরেশন এবং উপজেলায় এই ডিভাইস বসানো হয়েছে। জন্মবার্ষিকী উদযাপনে জনগণের সামনে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম উপস্থাপন এবং ত্বরান্বিত উন্নয়ন কার্যক্রম এবং ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ নির্মাণের জন্য পরিসেবাগুলো তুলে ধরা হবে।

জাতির পিতার শততম এ বার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি আতশবাজি উৎসবের মাধ্যমে শুরু হয় মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা।

দেশ-বিদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন, ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ এবং হাতে হাত রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি গড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ। এছাড়া কনসার্টসহ নানা আনন্দ আয়োজন ও রক্তদানসহ সেবাধর্মী কর্মসূচি থাকবে।

১৭ মার্চ মূল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বঙ্গবন্ধুর সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বকে। তাদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ প্রমুখ।

কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আগামী ১৭ মার্চ থেকে মুজিববর্ষ শুরু হচ্ছে। দেশ-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে। এ উদযাপনে সর্বস্তরের জণগণকে সম্পৃক্ত করা হবে। দেশ-বিদেশে নানা আয়োজনে বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত থাকবেন। সেই অনুযায়ীই আমাদের পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post শিগগিরই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিসংশনের সিদ্ধান্ত
Next post প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফর, প্রবাসীদের স্বপ্নপূরণের আশা
Close