Read Time:5 Minute, 27 Second

ইরাকের রাজধানী বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার ভোরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলেইমানি। এ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে ইরান এই হামলার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের ৫২টি স্থাপনায় পাল্টা আঘাত করার ঘোষণা দিয়েছেন।

তবে ইরানের প্রতি এমন ‘রণংদেহী’ মনোভাব দেখিয়েও ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের গদি নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজের দেশে বেশ চাপেই আছেন ট্রাম্প। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিনেটে তার ইমপিচমেন্টের বিষয়টি আলোচনায় ওঠার কথা।

তার আগে ইরাকে বিমান হামলায় জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে নিজের দেশের সবার নজর অন্যদিকে ভালোভাবেই সরাতে পেরেছেন ট্রাম্প। কিন্তু সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন সিনেটে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট তদন্তে সাক্ষ্য দিতে চাওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডয়চে ভেলের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদের উচ্চ কক্ষ সিনেটেও ইমপিচমেন্ট তদন্তের প্রস্তুতি চলছে। তবে সেখানে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আপাতত কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন ট্রাম্প।

তবে এরই মধ্যে গতকাল সোমবার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন জানিয়েছেন, তলব করলে তিনি সিনেটে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। ইউক্রেনের ওপর প্রেসিডেন্ট অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখতে পারেন বোল্টন।

কারণ সে সময়ে হোয়াইট হাউসে ক্ষমতাকেন্দ্রে সক্রিয় ছিলেন বোল্টন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য-প্রমাণ তিনি পেশ করলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও রিপাবলিকান দলের পক্ষে সেই ধাক্কা অগ্রাহ্য করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি ইউক্রেন সরকারের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন, বোল্টন তার চরম বিরোধিতা করেছিলেন বলে নিম্ন কক্ষের তদন্তের সময় একাধিক সাক্ষী দাবি করেছেন।

এদিকে ইউক্রেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প ও বোল্টনের তীব্র মতবিরোধ ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

নিম্ন কক্ষের তদন্তের সময় বোল্টন অংশ নিতে অস্বীকার করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসন তথ্য-প্রমাণ ও সাক্ষ্য আড়াল করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু সেই মামলায় সরকারের পরাজয়ের পর বোল্টন সাক্ষী হিসেবে এগিয়ে এসেছেন।

অন্যদিকে রিপাবলিকান দল আগে থেকেই কিছুটা দায়সারা ভাবে ইমপিচমেন্ট তদন্তের কাজ শেষ করার তোড়জোড় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কোনো সাক্ষী তলব করার বদলে শুধু নিম্ন কক্ষের তদন্তে জমা পড়া তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চান তারা। সিনেটে রিপাবলিকান দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল এমনই প্রস্তাব দিয়েছেন। পরে সাক্ষী তলব করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান তিনি।

খবরে বলা হয়, সিনেটে রিপাবলিকান দলের মাত্র চার জন সদস্য দলের বিরুদ্ধে গিয়ে সাক্ষী তলব করতে রাজি হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সংকটে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার শেষে ট্রাম্পকে সত্যিই ক্ষমতাচ্যুত করা হতে পারে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ট্রাম্পকে মোদির ফোন
Next post কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং-কে বাংলাদেশ ককাসের হাল ধরার অনুরোধ
Close