লস এঞ্জেলেসে নতুন পুরাতন প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির কিছু মানুষ নতুন সংগঠন তৈরী করেছে, নাম বাংলাদেশ আমেরিকান সোসাইটি (বাস)।
তাদের শ্লোগান ইউনিটি উই ট্রাস্ট। উদ্দেশ্য মাত্র একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মান করা। সময়োপযোগী স্বপ্ন। এ কমিউনিটির একটি সাইনবোর্ড আছে ‘লিটল বাংলাদেশ’। কিন্তু কোন ঠিকানা নেই। এই ঠিকানা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই কমিউনিটি সেন্টার নির্মানের স্বপ্ন। প্রবাসে তথা উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন শহরে বিশেষত: হিউসটনে এ ধরনের একটি উদাহরন রয়েছে। বিগত ২৫ বছর আগে আমরাও এমন স্বপ্ন দেখেছিলাম বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টারের। তার মাধ্যমে বাংলা পাঠশালা গড়ে উঠেছিল। এসবের তত্ত্বাবধানে ছিলাম আমি, সাথে ছিল মাসুদ রব চৌধুরী সহ প্রমুখ। কিন্তু তা সফলতা অর্জন করতে পারেনি, পারেনি তার কারন হল একতা ও পরিকল্পনার অভাব ছিল। বিগত এক যুগ আগে জাহিদ হোসেন পিন্টু ও পরলকমত মিজান শাহিনের উদ্দ্যেগে লিটল বাংলাদেশ এলাকায় গড়ে উঠেছিল কমিউনিটি সেন্টার। এগারোজন বোর্ড মেম্বর নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল কিন্তু তাও টিকিয়ে রাখতে পারেনি। কারন ছিল অনৈক্য, পরিকল্পনার অভাব ও অর্থায়ন সংকট অর্থাৎ আয়ের সুনির্দিষ্ট ব্যাবস্থা না থাকায় ভাড়া পরিশোধ করতে না পেরে বন্ধ হয়ে যায়। এখন বর্তমান সময়ে সেন্টু, হুমায়ন সহ অনেকে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে নিজস্ব ভবন সৃষ্টির মাধ্যমে একটি কমিউনিটি সেন্টারের। নি:সন্দেহে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। আমার অভিজ্ঞতায় বিষয়টির পজেটিভ সমালোচনা করব, বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জন্যে বিগত ২৪মে নভেম্বর,২০১৯ এ বাংলাদেশ আমেরিকান সোসাইটি (বাস) কমিউনিটির বিভিন্ন নেতা কর্মীদের সমাবেশে এক মতবিনিময় সভা করেছিল। সেখানে নতুন ও পুরাতনের সমাবেশে ব্যাক্তিবর্গে বক্তব্য পেশ করেন সকলেই একমত ছিলেন যে, কমিউনিটির জন্য একটি স্থায়ি ঠিকানা হিসাবে সেন্টারের প্রয়োজন। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের নির্মানের পক্ষ্যে নানা ধরনের আশা আকাঙ্খা তুলে ধরেন। ৫ মিলিয়ন ডলারের মত খরচ হবে, এমন কথা উঠে আসে। ড. নাজমুল উল্লাহ বলেন কমিউনিটি একতাবদ্ধ হলে অর্থ সংগ্রহ করা কোন ব্যাপার না। অপর আর একজন নেতা বলেন, সিটির কাছ থেকে লিজ নিয়েও এধরনের প্রকল্প তৈরী করা সম্ভব। নানা ধরনের আশার কথা ব্যাক্ত করেন। সেখানে আমিও বক্তব্য রেখেছি কিন্তু বিষয়টি ছিল ভিন্ন ধরনের। তাই বিশ্লেষন এখানে উল্লেখ করব। স্বপ্নকে আমরা দুভাবে দেখি, এক ইমোশনালি আর অপরটি বাস্তবতায়। কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে দুটির প্রয়োজন ইমোশনাল কাজ করবে স্বপ্নকে বাস্তবায়নে। কিন্তু কমিউনিটি সেন্টার আমি মনে করি না অলাভজনক প্রকিয়ায় বাস্তবরুপ নেবে। ট্রাস্ট গঠন করে ফান্ড সংগ্রহ করে স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দান করা একটি বিলাসিতা। এখন প্রশ্ন হল কমিউনিটির মানুষ কেন সেন্টারের জন্য অনুদান বা ডোনেশোন দেবে? কি লাভ তাদের উপকারিতা কি? মানুষ অর্থ অনুদান বা প্রদান করে তারও কয়েকটি কারন আছে,স্বার্থ জড়িত থাকে। কেউ হয়ত নাম, পদ-পদবি জন্য দিয়ে থাকে। মসজিদ বা ধর্মীয় কারনে মানুষ অর্থ প্রদান করে দার কারন বিশ্বাস । পরকালের বিশ্বাসে অর্থাৎ পরকালে রির্টান পাওয়ার উদ্দেশ্যে দেয়। কমিউনিটির মানুষ কেনো দেবে? নামের জন্য? নাকি প্রজন্মের স্বার্থে? এখান কার বেশীর ভাগ মানুষ যাদের সামর্থ আছে বা প্রফেশনার তাদের মধ্যে দেশাত্ব বোধের অভাব রয়েছে। যতই বলেন না কেন, দেশের জন্য তাদের কাছ থেকে চাদাবাজি করে অর্থ সংগ্রহ করা দুরহ হবে। প্রজন্মের জন্য তো নয়ই। এখানকার কয়টা পরিবারের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরা কমিউনিটির ব্যাবস্থা গড়ে উঠবে। গড়ে উঠবে বাংলাদেশের একটি মডেল সেন্টার। রেস্টুরেন্ট, দেশীয় পণ্যের, পোশাকের আধারের কেন্দ্র বিন্দু। যেখানে এসে কমিউনিটির মানুষ নিত্য প্রয়োজনিয় জিনিস সংগ্রহ করতে পারবে। অভিভাবকেরা নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে করে আনতে পারবে মানষিক প্রশান্তির ক্ষেত্র হিসেবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অতএব, অলাভজনক ট্র্যাস্ট গঠন প্রক্রিয়াকে লাভজনক প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিল করার চিন্তা ভাবনা করার প্রস্তাব পেশ করলাম মাত্র। এক্ষেত্রেও সকলের একতার প্রয়োজন রয়েছে। সবাইকে নিয়েই করতে হবে। ভিন্ন মত থাকতে পারে কিন্তু এক ও অভিন্ন থাকবে বাঙালীপনায়। বিগত মতবিনিয় সভায় কিছু মানুষের অনুপস্থিতি ছিল এবং তারা নিজেরাও মনক্ষুন্ন হয়েছে। বিষয়টি সংগঠনের সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। তিনি বলেন, আমাদের ভিতর কোন প্রকার বৈষম্যের চিন্তাভাবনা নেই। সভাটি ছিল সংগঠনের কর্মী ও উপদেষ্টা সহ বিশেষ আমন্ত্রিত ব্যাক্তিদের মতবিনিময় সভা। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতবিনিময়ের জন্য দফায় দফায় সকল মানুষদেরকেই আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের সহযোগিতা ও মতামত গ্রহণ করব। সবে মাত্র শুরু, কমিউনিটির কাউকেই বাদ দিয়ে কমিউনিটি সেন্টার করা হবে না। এখানকার কয়টা পরিবারের নতুন প্রজন্মের সন্তানেরা কমিউনিটির সাথে জড়িত আছে? ভাষার সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে? সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টির সাথে জড়িত? হবে কিভাবে? অভিভাকদের মধ্যেই সেই মনোভাব নেই। প্রবাসে বাংলাদেশী পরিবার নিজ কৃষ্টিকে জীবন যাত্রায় লালন পালন করেন। বিশেষত : সুবিধাভোগী কমিউনিটির মানুষ, ফলে প্রজন্মের মধ্যে তার প্রভাব বর্তায়নি। কমিউনিটির সেন্টার কিন্তু নতুন প্রজন্মের জন্য! এটা হবে তাদের ঠিকান! প্রকল্পে সেই চিন্তা চেতনা থাকতে হবে। একথা সত্য যে, যদি একটি পরিকল্পিত কমিউনিটি সেন্টার থাকে যেখানে তৈরি হবে দেশজ শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ধারা। ভাষার শিক্ষা ব্যবস্থা। শুধু মাত্র মিলনায়তন নয়। আমি মনে করি, অলাভজনক ট্র্যাস্ট গঠন করে যে অর্থ সংগ্রহ করা যাবে তা দিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভবপর নয়। এটাকে লাভজনক প্রকল্পে পরিচালিত করতে হবে। শেয়ার হোল্ডার পদ্ধতির মাধ্যমে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। নিজস্ব স্থানে নির্মিত হবে ৬তলা বিশিষ্ট (উদাহরণস্বরূপ) ভবন। যেখানে আবাসন, ব্যাবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিণত হবে। থাকবে মিলনায়তন ও শিল্প সাহিত্য এবং ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা। ব্যাংকিং প্রক্রিয়ায় গড়ে উঠবে প্রকল্প এবং আয়ের উৎস থাকবে যা স্থায়ী ব্যাবস্থা গড়ে উঠবে। গড়ে উঠবে বাংলাদেশের একটি মডেল সেন্টার। রেস্টুরেন্ট, দেশীয় পণ্যের, পোশাকের আধারের কেন্দ্র বিন্দু। যেখানে এসে কমিউনিটির মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করতে পারবে। অভিভাবকেরা নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে করে আনতে পারবে মানষিক প্রশান্তির ক্ষেত্র হিসেবে ইত্যাদি ইত্যাদি। অতএব, অলাভজনক ট্র্যাস্ট গঠন প্রক্রিয়াকে লাভজনক প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্দেশ্য হাসিল করার চিন্তা ভাবনা করার প্রস্তাব পেশ করলাম মাত্র। এক্ষেত্রেও সকলের একতার প্রয়োজন রয়েছে। সবাইকে নিয়েই করতে হবে। ভিন্ন মত থাকতে পারে কিন্তু এক ও অভিন্ন থাকবে বাঙালীপনায়। বিগত মতবিনিয় সভায় কিছু মানুষের অনুপস্থিতি ছিল এবং তারা নিজেরাও মনক্ষুন্ন হয়েছে। বিষয়টি সংগঠনের সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। তিনি বলেন, আমাদের ভিতর কোন প্রকার বৈষম্যের চিন্তাভাবনা নেই। সভাটি ছিল সংগঠনের কর্মী ও উপদেষ্টা সহ বিশেষ আমন্ত্রিত ব্যাক্তিদের মতবিনিময় সভা। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মতবিনিময়ের জন্য দফায় দফায় সকল মানুষদেরকেই আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদের সহযোগিতা ও মতামত গ্রহণ করব। সবে মাত্র শুরু, কমিউনিটির কাউকেই বাদ দিয়ে কমিউনিটি সেন্টার করা হবে না।
More Stories
৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র
ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে মিছিল করার অপরাধে পাঁচ বাংলাদেশিসহ চার শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর ‘স্টুডেন্ট ভিসা’ বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র।...
লস এঞ্জেলেসে লিটিল বাংলাদেশ কমিউনিটির চাঁদরাত মেলা যেমন ছিল
শামসুল আরিফীন বাবলু রোজা শেষে ঈদ’কে স্বাগত জানাতে লস এঞ্জেলেসে লিটিল বাংলাদেশ কমিউনিটির উদ্যোগে চাঁদরাত উপলক্ষ্যে এক ঈদ মেলার আয়োজন...
সব রেকর্ড ভেঙে দেশের ইতিহাসে এক মাসে এতো রেমিট্যান্স এসেছে
সব রেকর্ড ভেঙে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক মাসে রেমিট্যান্স এসেছে। গত মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে তিন বিলিয়ন (৩০০ কোটি)...
মিয়ানমারে বাংলাদেশি নাগরিকরা নিরাপদ রয়েছেন : রাষ্ট্রদূত
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরা নিরাপদ রয়েছেন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ...
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যালিফোর্নিয়া’র ইফতার
শামসুল আরিফীন বাবলু, প্রবাস বাংলা ডেস্ক যুক্তরাস্ট্রে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটিদের সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ক্যালিফোর্নিয়া’র আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল...
ক্রিকেটার সেজে মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা, আটক ১৫ বাংলাদেশি
ক্রিকেটার সেজে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টাকালে ১৫ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) তাদের আটক...