Read Time:5 Minute, 17 Second

বিশ্বের সেরা পুলিশ বাহিনীর অন্যতম নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (এনওয়াইপিডি) নির্বাহী কর্মকর্তা ‘ক্যাপ্টেন’ হচ্ছেন বৃহত্তর সিলেটের সন্তান কারাম চৌধুরী (৩৯)। আগামী বুধবার নিউ ইয়র্ক পুলিশের সদর দপ্তর ‘ওয়ান পুলিশ প্লাজা’য় আড়ম্বরপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে তাকে ক্যাপ্টেন পদোন্নতি দেওয়া হবে। এদিন আরো কয়েকজন বাংলাদেশি আমেরিকান বিভিন্ন পদে পদোন্নতি পেতে যাচ্ছেন।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তার এই পদে এ পর্যন্ত কারাম চৌধুরীসহ তিনজন বাংলাদেশি আমেরিকান পদোন্নতি পেলেন। ফলে নিউ ইয়র্ক পুলিশপ্রধান অর্থাত্ পুলিশ কমিশনার হিসেবে কোনো বাংলাদেশির দায়িত্ব পালনের পথ আরো প্রশস্ত হলো। এর আগে কারাম চৌধুরীর খালাতো ভাই সিলেটের আরেক সন্তান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং পারোল আহমেদ ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। বাংলাদেশি আমেরিকান মিলাদ খান ক্যাপ্টেন হিসাবে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। নিউ ইয়র্ক পুলিশে বাংলাদেশি অফিসারদের একের পর এক সাফল্যে দারুণ খুশি বাংলাদেশি কমিউনিটিও।

কারাম চৌধুরী বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার তিলাগাঁও গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন চৌধুরীর একমাত্র পুত্র কারাম চৌধুরী ১৯৯৩ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। লেখাপড়া ও বেড়ে ওঠা নিউ ইয়র্কেই। পড়ালেখা শেষ করে নিউ ইয়র্কের ফাইন্যান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্টে চাকরি করেছেন। কিন্তু ইচ্ছা ছিল চ্যালেঞ্জিং কোনো পেশায় আসার। আর তাই ২০০৫ সালে যোগ দিলেন নিউ ইয়র্ক পুলিশের অফিসার পদে। ধাপে ধাপে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অফিসার থেকে সার্জেন্ট ও লেফটেন্যান্ট এবং সর্বশেষ পেলেন নির্বাহী কর্মকর্তার পদ।

কারাম চৌধুরী ইত্তেফাককে জানান, ‘পুলিশের চাকরিতে সেবা করার সুযোগ বেশি। সেই সেবার মানসিকতা নিয়েই পুলিশের চাকরি বেছে নেই। আমি খুব খুশি। এই পদোন্নতিতে এখন আরো সেবা করার সুযোগ বাড়ল। তিনি জানান, আমি বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য কাজ করতে চাই। কারণ বাংলাদেশই আমার শেকড়।’

সাত বছর বয়সে বাবাকে হারানো কারাম চৌধুরী পদোন্নতির এই মুহূর্তে বাবাকে ভীষণ মনে পড়ছে জানিয়ে বলেন, আজ বাবা থাকলে খুব খুশি হতেন, যেমনটি আমার মা খুশি হয়েছেন। স্ত্রী বেগম চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন পরীক্ষার আগে একটানা আট মাস আমাকে পড়াশোনা করতে হয়েছে। এই সময়টাতে একমাত্র ছেলেকে সামলানোসহ সংসারের সব দেখভাল করেছেন স্ত্রী। মায়ের দোয়া ও স্ত্রীর সহযোগিতা না পেলে তিনি এ পর্যন্ত আসতে পারতেন না বলে জানান কারাম চৌধুরী।

ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগদানের পর এক মাসের প্রশিক্ষণে যাবেন কারাম চৌধুরী। এখানে উল্লেখ্য, ৬৩ বছর বয়স পর্যন্ত নিউ ইয়র্ক পুলিশের চাকরি করা যায়। সে হিসাবে আরো ২৫ বছর চাকরি করতে পারবেন তিনি। সে লক্ষ্য নিয়েই কারাম চৌধুরী স্বপ্ন দেখেন আরো সামনে এগিয়ে যাওয়ার।

কারাম চৌধুরী নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর। নিউ ইয়র্ক পুলিশের হিরো এবং বাপা’র মিডিয়া লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি জানান, কারাম চৌধুরীর এই সাফল্যে বাপা গর্বিত এবং সংগঠনে তার নেতৃত্বও ব্যাপক প্রশংসিত।



Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post যৌন হয়রানি : বরখাস্ত হলেন নিউইয়র্ক ট্রাফিক এজেন্ট ইউনিয়নের সভাপতি সাঈদ রহিম
Next post অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ‘তরুণ ধনী’র তালিকায় বাংলাদেশের আশিক
Close