Read Time:4 Minute, 26 Second

মালয়েশিয়ায় জাল ভিসা তৈরি সিন্ডিকেটের যুক্ত ১৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার সেলাংগর প্রদেশের ক্লাং ও শাহ আলমের ১১টি স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের এসব সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। 

সেলাঙ্গরের অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান এসিপি ফজলসিয়াম আবদুল মজিদ বলেন, এই ১৭ জনের মধ্যে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত স্থানীয় এক ব্যক্তি ও স্থানীয় একজন নারী, সাত পাকিস্তানি এবং আটজন বাংলাদেশি রয়েছে। যাদের বয়স ১৯ থেকে ৪০ বছররের মধ্যে। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফজলসিয়াম বলছিলেন, গত এক বছর ধরে সিন্ডিকেটটি সক্রিয় ছিল এবং দু’জন মাস্টারমাইন্ডের নেতৃত্বে স্থানীয় একজন পুরুষ এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিক, যাদের নিজের কোন পাসপোর্ট ছিল না। স্থানীয় একজন নারী এবং আটজন পুরুষ সাপ্লাইয়ার হিসেবে এ সিন্ডিকেট সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল।

সিন্ডিকেটটি ক্লাং ভিত্তিক অবৈধভাবে বিদেশি শ্রমিকদের মাঝে জাল ভিসা সরবরাহের ব্যবসা করে আসছিল।

সিন্ডিকেটের প্রধান কাজের ধরণ ছিল ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে মালায়েশিয়ায় আসা অবৈধ বিদেশি কর্মীদের খুঁজে বের করা এবং তাদের নকল ওয়ার্ক পারমিটের অফার দেওয়া। এরপর সেলাঙ্গরে নিয়োগকারীদের নিকট তাদের কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। ফজলসিয়াম বলেছেন, এ পর্যন্ত তদন্তে দেখা গেছে প্রায় ৩০ জন বিদেশি জাল ওয়ার্ক পারমিটসহ ইতোমধ্যে নিয়োগকর্তাদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছিল। তবে পুলিশ বিশ্বাস করে তাদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল।

ফজলসিয়াম আরও বলেন, সিন্ডিকেট প্রতিটি জাল পারমিটের জন্য ৪০০ রিংগিত করে নিতো এবং মনে করা হচ্ছে এক মাসে তাদের ৫,০০০ রিংগিত সমপরিমাণ এর মুনাফা আসতো।

অভিযানকালে জব্দ করা আইটেমগুলির মধ্যে দুটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টিং মেশিন এবং দুটি জাল পারমিট, পাশাপাশি ছয়টি আই-কার্ড (বিদেশিদের দেওয়া ব্যক্তিগত পরিচয় দলিল) জাল বলে সন্দেহ করা হয়।

প্রতারণা ও বেআইনিভাবে ভুয়া পারমিট বিতরণ করার অপরাধে দণ্ডবিধির ৪০২ ধারায় তদন্তের জন্য ১৭ জনের মধ্যে আটজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের পর্যায়ক্রমে রিমান্ডে নেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

ফজলসিয়াম সাংবাদিকদের জানান, অবৈধ কর্মকাণ্ডের ব্যবসা ও তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ অক্টোবর পুচংয়ের একটি দ্বিতল ভবনের বাড়ি থেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৮ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়।

ভুক্তভোগীদের পাঁচটি পুলিশ রিপোর্ট এর ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়, যাদের মধ্যে চারটি মাদক, অবৈধ দাদন ব্যবসার কার্যক্রম এবং হামলার সাথে সম্পর্কিত অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত এক বছরে জাল ভিসা তৈরি ও সরবরাহের অপরাধে প্রায় ২০ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল জরিমানা করা হয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস
Next post চাপা পড়ে যাচ্ছে আবরার হত্যার মূল কারণ
Close