Read Time:5 Minute, 8 Second


বাংলাদেশ ইউনিটি ফেডারেশন অফ লস এঞ্জেলেস (বাফলা) গঠিত হয়েছিল ২০০৬ সনে। শুরুতে বাংলাদেশ ডে প্যারেড দিয়ে শুরু হলেও এখন বাফলার কর্ম পরিধি বিস্তৃতি লাভ করেছে। বাফলার ১৩’তম প্যারেড হলো গত রবিবার ৩১’শে মার্চ। ১৩ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ সরকারের কোনো মন্ত্রী এই প্রথম প্যারেডে অতিথি হয়ে আসলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাৎসরিক এই প্যারেডে অনুষ্ঠিত হলেও, প্যারেডে এবং বাফলা নিয়ে কমিউনিটিতে কিছু মানুষের মাঝে বিতর্ক ও বিভক্তি রয়েছে। বাফলার গঠন প্রক্রিয়ায় যিনি প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন, কমিউনিটির একশ্রেণীর মানুষের কাছে তার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার রয়েছে। বিতর্ক রয়েছে প্যারেডের নামকরণ নিয়েও। আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল বাফলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি নির্ভর একটি সংগঠন। তাদের এই অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করতে বারবার বাফলায় মুনার সংশ্লিষ্টতা সামনে নিয়ে এসেছে।

বাফলার এবারের প্রেডিডেন্ট নজরুল আলম আওয়ামী লীগ সমর্থিত। এবারের প্যারেডে তার সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল বাফলার এই নেতিবাচক পরিচিতি মুছে দিয়ে কমিনিটির আওয়ামী লীগ এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে প্যারেডে নিয়ে আসা। সেই চেষ্টায় তিনি অনেকটাই সফল। আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীকে নিয়ে আসা ছাড়াও বাফলার বিরুদ্ধে শুরু থেকে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগের একটি অংশ (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্যালিফোর্নিয়া) শাখাকে প্যারেডে সম্পৃক্ত করা। আওয়ামী লীগের এই গ্রুপের নেতা অতীতে বাফলার বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচিও পালন করেছে কিন্তু এবার তিনি বাফলাকে অর্থ ও জনবল সবদিক থেকে সহযোগিতা করেছে। কমিউনিটিতে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচিত জাহেদুল মাহমুদ জামি বাফলাকে রাজাকারের সংগঠন বলে দীর্ঘদিন দূরে সরে থাকলেও এবার তিনিও উপস্থিত ছিলেন প্যারেডে ও বাফলা মেলায়। বাফলা বিরোধী এই অংশটি ইতিপূর্বে বহু অভিযোগ উত্থাপন করে, এবার প্যারেডে অংশ নেওয়া ছাড়াও তাদের মুখে বাফলার গুনগান শুনে কমিউনিটির অনেক সাধারণ সদস্য অবাক হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মূল অংশটিকে বাফলা প্যারেডে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

শোনা যায়, তাদের প্যারেডে আনার জন্য নজরুল ইসলাম চেষ্টা করেছিল কিন্তু নিরাশ হয়েছেন ।

ফলশ্রুতিতে তড়িঘড়ি করে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের গ্রুপিং রাজনীতির নতুন মেরুকরণ করছেন। বাফলার আরেকটি অংশ অবশ্য এবারের প্যারেডকে আওয়ামীকরণ করার অভিযোগ করেছেন। মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সমালোচনা থেকে বাচতে মুনা কতৃক পরিচালিত বাফলার সেমিনার বাদ এবং প্রকাশনা কমিটিতে মুনার কোনো সদস্য রাখা হয়নি। এ বিষয়ে মুনা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তারা বিষয়টিকে সহজ ভাবে নেয়নি।

কমিউনিটির পর্যবেক্ষেকরা বলছে, আওয়ামী লীগের গ্রুপিং এর কারণে বাফলা আওয়ামী লীগের একটি অংশকে সফল ভাবে ব্যবহার করতে পেরেছে এবং আগামীতে আওয়ামী লীগের এই অংশটির বাফলা সম্পর্কে নেতিবাচক অভিযোগ উত্থাপনের সুযোগ থাকলোনা, যেটা তারা করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। সবকিছু বিবেচনায় এনে বাফলার এবারের প্যারেডে সফল। এবং এ কথা দৃঢ়ভাবে বলা যায় বাফলা বিরোধী স্রোতকে কৌশলে বশীভূত করে প্যারেডে সম্পৃক্ত করা বাফলার এক বিরাট সাফল্য।

পরিশেষে বলা যায় জয় হলো বাফলার! জয় বাফলা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশের পরিকল্পনা মন্ত্রীকে সংবর্ধনা
Next post ধাপে ধাপে খালেদা জিয়ার মুক্তির চূড়ান্ত আন্দোলন : আমির খসরু
Close