Read Time:6 Minute, 12 Second

বাফলার বাংলাদেশ ডে প্যারেডের ২য় দিন ৩১ মার্চ ছিল ঐতিহাসিক প্যারেড। বিকেল তিনটার দিকে লিটল বাংলাদেশের থার্ড স্ট্রীট ও ভারমন্ট সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তা বন্ধ করে এই প্যারেড শুরু হয়ে ভার্জিল মিডল হাইস্কুলের ফেস্টিবল এলাকায় সমাপ্ত হয়। এবারের প্যারেড মার্শাল ছিলেন জর্জিয়ার স্টেট সিনেটর বাংলাদেশী আমেরিকান শেখ রহমান এবং প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান ও আমন্ত্রিত অতিথি বিএনপির প্রাক্তন বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, লস এঞ্জেলেস কন্সাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা, সরওয়ার হোসেন (প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ক্যানাডা আওয়ামী লীগ) ও গ্র্যান্ড স্পন্সার মার্শাল এর অনুমতিক্রমে প্যারেডের যাত্রা শুরু হয়। প্যারেডের অগ্রভাসে ছিল তিনটি অশ্বরোহি যারা বাংলাদেশ, আমেরিকা ও বাফলার পতাকা বহন করে। এরপর ছিল ঘোড়ার গাড়ী। তাতে আরোহী ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পী এস আই টুটুল ও মেহের আফরোজ শাওন। তারপর ছিল মেহেদী হাসান এর নেতৃত্বে বিশাল হার্ডলি ডেভিটসনের বহর। প্যারেডে ছিল তিনটি ফ্লট যার একটিতে ছিলেন সকল ডিগনিটরি। প্যাডেডে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহন। গত এক যুগ পর এই প্রথম ১৩তম প্যারেডে প্রথমবারের মত আওয়ামী পরিবারের অংশগ্রহণ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্যালিফোর্নিয়ার অংশগ্রহণ ও প্যারেডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণও বাজানো হয়। প্রথমবারের মত ঐক্যবদ্ধতায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও মুনার অংশগ্রহনের মূলমন্ত্র সার্থকে পরিনত হয়। বিএনপি প্যারেডে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্লোগানদেন। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ স্বঅবস্থানে স্লোগান ও পাল্টা স্লোগানদেয়। কিন্তু প্যারেড ছিল শান্তিপূর্ণ ও জাকজমকপূর্ণ। দুদেশের বিশাল পতাকা, বিজয় দিবসের ও শহীদ মিনারের মডেলসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণ ছিল দর্শনীয়। রাস্তার দু পাশে মূলধারার মানুষ প্যারেড উপভোগ করেন। বাংলাদেশ ডে প্যারেড ২০১৯ এ তৃতীয়বারের মত মরনোত্তর বাফলা পদক প্রদান করা হয়। এবার পদক পেয়েছেন- প্রয়াত লেখক হুমায়ূন আহমেদ। তার পক্ষে এটি গ্রহণ করেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এছাড়া কাজী মশহুরুল হুদা গ্রহণ করেন বাফলা এ্যাওয়ার্ড। বাংলাদেশ ডে প্যারেড উপলক্ষ্যে আব্দুস সামাদের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় উন্নতমানের সংকলন, অপরাজিতা।
প্যারেড শেষে আকাশে চার্টর প্লেনের মাধ্যমে প্রথম বারের মত স্বীকৃতি স্বরূপ উদ্বোধন ব্যানার লস এঞ্জেলেস প্রদক্ষিণ করে। যাতে ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, লও সালাম’। বাফলা অতীতের সকল বাধা বিপত্তি ও সালোচনা অতিক্রম করে আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রমাণ করল দল, মত, ধর্ম যার যার তার তার। একত্রে ও ঐক্যদ্ধতায় আমরা সকলেই বাংলাদেশী। সকল বাংলাদেশীদের মতের অমিল থাকতে পারে কিন্তু প্রবাসে আমরা সবাই এক ও অভিন্ন। এবারই প্রথম কোন সরকারের মন্ত্রী বাফলার প্যারেডে অংশগ্রহণ করে প্রমানীত হল যে বাফলা কোন দলের নয়, প্রবাসী বাংলাদেশীদের সকলের।
অতিথিদের বক্তব্যে প্রবাসে বাফলার উদ্যোগকে একটি দারুণ কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছেন। বাফলাকে এই নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার পেছনে প্রশংসার দাবীদার হচ্ছেন সংগঠনের সভাপতি নজরুল আলম ও তার টিম সদস্য। ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত ফেস্টিবলে বাফলার সর্বকালের রেকর্ড করেছে দর্শক সমাগমে। দু’একটি ছোটখাটো দুর্ঘটনার অবতারণা হলেও তার প্রভাব বাংলাদেশ ডে প্যারেডের কোন রকম ক্ষতি করতে পারেনি। কেউ কেউ ক্ষতির প্রচেষ্টা করেও বাংলাদেশ ডে প্যারেডের সাফল্যকে ঠেকাতে পারেনি। সকলের সহযোগিতায় সফলভাবে এবারও প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ ডে প্যারেড। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলেরই হৃদয় কেড়েছে। যা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত এবং উপভোগ্য একটি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনায় ও উপস্হাপনায় ছিলেন সুন্দর কন্ঠের অধিকারী সংগঠনের সাধারন সম্পাদক শহিদুল আলম।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ১৩তম বাংলাদেশ ডে প্যারেড এণ্ড ফেস্টিবল উদ্বোধন
Next post গ্র্যামি জয়ী র‌্যাপার নিপসি হাসলকে গুলি করে হত্যা
Close