Read Time:6 Minute, 9 Second

কাজী মশহুরুল হুদা :

লিটল টোকিও হিসটোরিক ডিস্ট্রিক হিসেবে লস এঞ্জেলেস ডাউন টাউনে জাতীগতভাবে জাপানীজ আমেরিকান ডিস্ট্রিক। যা জাপানীজ আমেরিকানদের বৃহত্তর কেন্দ্রবিন্দু। সমগ্র আমেরিকায় মাত্র তিনটি অফিসিয়ালি জাপানীজ টাউন আছে। যার সবই ক্যালিফোর্নিয়ায় (অন্য দুটি সানফ্রান্সিসকো ও স্যান হোসে)। টোকিও টাউনগুলো স্থাপিত হয়েছে বিশ দশকের গোড়ার দিকে। লিটল টোকিও সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার জাপানীজ আমেরিকানদের কালচারাল সেন্টার ১৯৯৫ সালে ন্যাশনাল হিসটোরিক ল্যান্ডমার্ক ডিস্ট্রিক হিসেবে অফিসিয়ালী স্বীকৃতি পায়। লিটল জাপান না বলে কেনো লিটল টোকিও হল তা জানা যায়নি। লিটল বাংলাদেশের সূচানতে বাংলাদেশী কমিউনিটি লিটল বাংলাদেশ হিসেবে দাবী করেনি। করেছিল লিটল ঢাকা। তারও একটা ইতিহাস আছে। যদিও বলা হয় ষাট দশকে স্টুডেন্ট হিসেবে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান থেকে বাংলাদেশীদের লস এঞ্জেলেসে আগমন, তথাপি কোন কমিউনিটির অনুষ্ঠানে অন্য কমিউনিটির বা মূলধারার মানুষের আগমন ঘটেনি ২০০১ সালের পূর্বে। সাহিত্য সম্মেলনের সমাবেশে তৎকালীন লস এঞ্জেলেস মেয়ের পদপ্রার্থী এনথোনিও ফিলারোগোছা প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির (শামীম হোসেন) এর মাধ্যমে সাহিত্য সম্মেলনের সমাবেশে উপস্থিত হন নির্বাচনী প্রচারণার জন্য। তখন সবাই হতবাক ও বিহ্বলিত। যেহেতু তিনি মেয়র প্রার্থী তখন হঠাৎ করেই মঞ্চে দাবী করা হল আমরা তোমার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি কিন্তু তোমার কাছে আমাদের একটি দাবী, আমাদের কমিউনিটির জন্য ‘লিটল ঢাক’ নামকরণ করেদিতে হবে। তিনি তাৎক্ষনিকভাবে রাজী হয়ে গেলেন। তারপর লম্বা ইতিহাসের ভেতর দিয়ে ‘লিটল বাংলাদেশ’ নামকরণ হয় (বিস্তারিত ক্রমানুসারে জানা যাবে)। এই তাৎক্ষনিক দাবীটি ছিল পারিপাশ্বিকতা থেকে। ধারণা করা যায়, জাপানীজ বা যেমন লিটল টোকিও করেছে জনপ্রিয় সিটি অথবা অধিকাংশ এসেছে টোকিও থেকে। যিনি ‘লিটল ঢাকা’ প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি ঢাকার বাসিন্দা, সেভাবেই আমি বলব হুজুকেই প্রস্তাব এসেছিল, যা পরবর্তীতে জাতিগত চিন্তা চেতনায় দাবীকে ‘লিটল বাংলাদেশ’ নামকরণের পক্ষে সকলের মতামত যুক্ত হয়। যা হোক লিটল টোকিও’র ইতিহাসের কথা আসি। ১৯০৫ সালে লিটল টোকিও এলাকাকে বর্ণনা করা হয় স্যানপোডরো, ফাস্ট স্ট্রীট এবং রিকুয্যেনাস্ট্রীস্ট ও সেন্ট্রাল এভিন্যু’র সীমা রেখায়। তৎকালীন ৩,৫০০ জাপানীস এই এলাকায় বসবাস করত এবং ছিল স্যুইস কলোনী এবং রাশিয়ান ও অল্প সংখ্যক আমেরিকানের বাসস্থান ছিল। পরবর্তীতে লস এঞ্জেলেসের ১০,০০০ জাপানীজ এই অংশকে ( জুন ১৫, ১৯০১ ) তাদের নির্দিষ্ট মিলনস্থান করে তোলে। এই এলাকা জাপানীজ ইমিগ্রেন্ট ম্যাগনেট হিসেবে ১৯২৪ সালের পূর্ব পর্যন্ত ছিল। এক্সক্লুশন একট অব ১৯২৪ ইমিগ্রেশন থামিয়ে দেয়। ১৯৪১ সালের দিকে এই লিটল টোকিওতে ৩০,০০০ এর মত জাপানীজ আমেরিকান বসবাস করত। দ্বীতিয় মহাযুদ্ধের সময় লিটল টোকিও থেকে জাপানীজ আমেরিকান শূন্য হয়ে পড়ে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই এলাকায় আফ্রিকান আমেরিকান, নেটিভ আমেরিকানস এবং ল্যাটিনোজে পূর্ণ হয়ে যায়। ১৯৪২ সালের শুরুতে জাপানীজ জনসংখ্যা শূণ্যের কোঠায় পৌঁছায়। সকলকে জোরপূর্বক ক্যাম্পে স্থানান্তরিত করে। ১৯৫০ সালের দিকে যুদ্ধের পর লিটল টোকিওতে হাউজিং সমস্যার জন্য ক্যাম্প থেকে ফেরত আসা জাপানীজ আমেরিকান রয়েল হাইটস লিটল টোকিওর পূর্ব দিকে বয়েল হাইটস সহ ডাইন টাউনের বিভিন্ন দিকে বসতি গড়ে তোলে। ১৯৭০ এর শেষের দিকে জাপানীজ করপোরেশন রিডেভোলপমেন্ট মূভমেন্টের মাধ্যমে ওভারসীজ অপারেশন শুরু করে এবং লস এঞ্জেলেসকে হেড কোয়ার্টার হিসেবে তৈরি করে। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালের দিকে আর্টিসদের আগমন ঘটে এবং গড়ে ওঠে আর্ট ডিস্ট্রিক। ধীরে ধীরে জাপানীজ আমেরিকানদের সহায়তায় লিটল টোকিওকে সুরিস্ট বিনোদন স্থান হিসেবে গড়ে তোলে। বর্তমানে ৩০,০০০ জাপানীজ আমেরিকান বসবাস করে লিটল টোকিওতে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post লিটল বাংলাদেশের মত ভিন্ন জাতির ইতিহাস (হিসটোরিক ফিলিপিনো টাউন)
Next post পরকীয়ার বলী! ফেইক ভালোবাসা হতে সাবধান!
Close