Read Time:6 Minute, 39 Second

২. থাই টাউন :

আমেরিকায় কোন থাই টাউন নেই। এটিই একটি এবং একমাত্র থাই টাউন হিসেবে লস এঞ্জেলেসের হলিউডে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

অনেক দিক থেকে থাই টাউনের সাথে লিটল বাংলাদেশের মিল রয়েছে। আমেরিকার বুকে লিটল বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বে লিটল বাংলাদেশ প্রথম এবং একিট যা ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলেসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। থাই টাউন যেমন একটি রাস্তার উপর (হলিউড বুলে বার্ড) কয়েক ব্লক জুড়ে রয়েছে, ঠিক তেমনি লিটল বাংলাদেশ একটি রাস্তার উপর (থার্ড স্ট্রীষ্ট, লস এঞ্জেলেস) কয়েক ব্লক জুড়ে বিস্তৃত। যখন কমিউনিটির মানুষ সিটি হলে লিটল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সিটি হলে জমাদেয়, তখন ডিস্ট্রিক-১৩ এর কাউন্সিল ম্যান টম ল্যাবাঞ্জ কন্সুলেট জেনারেল অফিসে চিঠি লিখে কংরাচুলেট করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে কোরিয়ান কমিউনিটির চাপে তার সমর্থন লিটল বাংলাদেশ থেকে তুলে নিয়ে অপর আর একটি চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন।

তখন থেকে সিটি কাউন্সিল ম্যান সম্ভাবনার দৃষ্টান্ত হিসেবে থাই টাউনকে মডেল দেখানো হয়। লিটল আরমেনিয়ার ভেতর যদি থাই টাউন সহ অবস্থানে পারস্পারিকভাবে বন্ধুত্বমূলক আচরণে অবস্থান করতে পারে তাহলে কোরিয়া টাউনের ভেতর লিটল বাংলাদেশ হতে পারবে না? নাসূচক সিদ্ধান্ত পরিহার করার যে কয়টি মূল কারণ ছিল, এই উদাহরণ একটি অন্যতম।

লস এঞ্জেলেসের উত্তর হলিউডের ছয়টি ব্লক জুড়ে এই থাই টাউন এলাকা। আমেরিকার মধ্যে একমাত্র থাই টাউন হিসেবে স্বীকৃত। (আমেরিকার আর কোথাও থাই টাউন নেই)। লস এঞ্জেলেস সিটি কতৃক অনুমোদিত থাই টাউন হলিউড বুলেবার্ডের উপর নরম্যান্ডি এভিন্যু থেকে ওয়েস্টার্ন বুলে বার্ড পর্যন্ত বিস্তৃত সীমারেখা।

থাই টাউনের প্রবেশ দ্বারে (ওয়েস্টার্ন দিক থেকে) রাস্তার দু’পাশে দুটি থাই ফোক লর্ডের মূর্তি আছে। যাকে বলে এপসনসি (অর্ধ মানুষ ও অর্ধ সিংহের প্রতিকৃত)। পূর্ব হলিউড ডিস্ট্রিক পৃষ্ঠ থেকেই ইমিগ্রেন্ট মানুষের বসতি। এখানে আরমেনিয়ান এবং ল্যাটিনো দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে এবং এই অঞ্চলে ১৯৬০ সালের দিক থেকে বসবাস করা শুরু করে থাই আমেরিকানস। ইস্ট হলিউডের এই এলাকা অল্প আয়ের মানুষের বসতি।

জরিপের মাধ্যমে জানা গেছে, ২৭% ভাড়াটিয়া বসবাস করে দরিদ্র মানুষ। বিগত ২৭শে অক্টোবর ১৯৯৯ সালে লস এঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিল এর স্বতস্ফুর্ত সমর্থন ও ভোটে ‘থাই টাউন’কে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। থাই টাউনের জন্য সিটি হলে প্রস্তাব আকারে আবেদন করেছিলেন কাউন্সিল ওমেন, জ্যাকি গ্লোডবার্গ। তিনি মনে করেছিলেন, থাই টাউন এলাকা গর্বিত নেবারহুডে পরিণত হবে, অর্থনৈতিক উন্নতি ও পর্যটনের ক্ষেত্রে সাফল্য বয়ে আনবে। এ ক্ষেত্রে থাই কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট সেন্টার থাই কমিউনিটি, এমনকি ইস্ট হলিউড বিজনেস কমিউনিটি থাই টাউন প্রতিষ্ঠার ভূমিকা রেখেছে। থাই টাউনকে কেন্দ্র করে সংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠছে থাই রেস্টুরেন্ট, কালচারাল ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান।

উল্লেখ্য যে, ৭৬টি বিভাগ বা প্রোভিন্স নিয়ে থাইল্যান্ড গঠিত। প্রবাসী থাইল্যান্ডের মানুষ লস এঞ্জেলেসের হলিউডে অবস্থিত থাই টাউনকে থাইল্যান্ডের ৭৭ প্রোভিন্স হিসেবে আখ্যায়িত করে।

থাই টাউনকে উন্নয়নের জন্য থাই ডেভলপমেন্ট সেন্টার এলাকাকে পর্যটন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা করে শুধুমাত্র থাই কমিউনিটির জন্য নয়, এলাকায় বসবাসরত সকল কমিউনিটির মানুষের জন্য। ২০০৮ সালে থাই কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট সেন্টার লস এঞ্জেলেসের এপিআই অর্থাৎ এশিয়ান প্যাসিফিক আইল্যান্ডার কমিউনিটির সাথে পার্টনারশীপের হাত প্রসারিত করে।

উল্লেখ্য, ৫টি এপি আই টাউনকে সংরক্ষিত আমেরিকা নেবারহুড হিসেবে জাতীয়ভিত্তিক স্বীকৃতির জন্য হোয়াইট হাউস লবিং করে।

সংরক্ষিত আমেরিকা নেবারহুড কমিউনিটি হল চায়না টাউন, লিটল টোকিও, হিসটোরিক ফিলিপাইন টাউন, কোরিয়া টাউন ও থাই টাউন।

[বিভিন্ন কমিউনিটির কার্যক্রম তুলে ধরার উদ্দেশ্য হলে- ভিবিষ্যতে লিটল বাংলাদেশ কমিউনিটির জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনার পথ সৃষ্টির সুযোগ ঘটানো। অন্যান্য কমিউনিটি কিভাবে তাদের অবস্থান সৃষ্টি করে নিয়েছে, তেমনিভাবে লিটল বাংলাদেশ কমিউনিটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদেরকে আমেরিকায় সংরক্ষিত আমেরিকা নেবারহুড কমিউনিটিতে পরিণত হতে পারে।]

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post রিয়াদে বিজয় উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
Next post শেখ হাসিনাকে ট্রাম্পের অভিনন্দন
Close