Read Time:6 Minute, 13 Second

কাজী মশহুরুল হুদা :

লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশ কমিউনিটির বসবাস প্রায় ৪৯ বছরের ইতিহাস এবং মূলধারার কমিউনিটির সাথে যোগসূত্র সৃষ্টি হয়েছে বিগত ১৭/১৮ বছর। এর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ‘লিটল বাংলাদেশ’। অথচ নির্বাচিত প্রতিনিধিতে এই কমিউনিটি অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে অন্যান্য কমিউনিটির তুলোনায়। নেবারহুড কাউন্সিল থেকে শুরু করে সিটি হল পর্যন্ত আমাদের পদচারণা মুষ্টিমেয় হাতে গোনা মানুষের। রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মকান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবস্থান অতিনগন্য। অথচ মূলধারায় আমরা যদি স্থান করে নিতে পারি বা দাঁড়াতে পারি তাহলে কমিউনিটির মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। সৃষ্টি হবে আগামী প্রজন্মের প্লাটফর্ম। উপকৃত হবে লস এঞ্জেলেসে বসবাসরত প্রবাসী কমিউনিটি তথা দেশ ও জাতি। সেদিকে দৃষ্টিপাত না করে আমরা বেশি সময় অপচয় করছি দেশীয় রাজনীতির পেছনে, যা প্রবাসী কমিউনিটির কোন কাজেই আসে না। বরং দেশীয় রাজনীতি থেকে দূরে থেকেও কমিউনিটির মধ্যে বিভেদ, দ্বন্দ্ব, কোন্দোল সৃষ্টি করছি।

তবে আশার কথা হচ্ছে বর্তমানে দু’একজন ব্যাক্তি মূলধারায় সংযোগ স্থাপন করছেন। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে তাদের অধিকাংশই ব্যাস্ত থাকেন নিজেদের বা ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার জন্য। মেয়রের লেজুড় ভিত্তিক কর্মকান্ডে নিজেদের অবস্থান নিয়েই পড়ে আছেন তারা। বিগত দুই বছর কয়েকজন ব্যাক্তিকে দেখাগেছে নেবারহুড কাউন্সিলে গিয়ে ব্যাক্তি স্বার্থের প্রতি দৃষ্টি দিয়েছেন। অন্যান্যদের প্রতি ধারাবাহিকতার কোন প্রক্রিয়া নির্মাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যাক্তিকৃতিত্ব সৃষ্টি করতে গিয়ে অতীতে সমগ্র কমিউনিটিকে ঢুবিয়ে ছাড়তে কুণ্ঠাবোধ করেনি তারা। লিটল বাংলাদেশ নেবারহুড অবনতি ঘটেছে এই কমিউনিটির। পিছিয়ে গেছে মূলধারায় কমিউনিটির অবস্থান। বর্তমানে নেবারহুড কাউন্সিলের নির্বাচনে কমিউনিটির মানুষদের উদ্বুদ্ধ করতে সেই সকল তথাকথিত কমিউনিটি একটিভিস্টখ্যাত ব্যাক্তিবর্গকে নিরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।

চলতি নির্বাচনের সংবাদ পর্যন্ত কমিউনিটিতে প্রচারিত না হওয়ায় কমিউনিটির প্রতিনধিত্ব শূণ্য হয়ে পড়েছে মূলধারার সেতুবন্ধুন। আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে মাত্র দুজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করে কমিউনিটির মান রক্ষা করেছেন। অথচ ঐসকল একটিভিস্ট নামধারীগণ যদি প্রচার করে জানাতেন তাহলে অনেকেই বিভিন্ন পদের জন্য অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে কমিউনিটির মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে মূলধারায় পদচারণার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারতো। যেখানে তাদের ব্যাক্তিস্বার্থ জড়িত নেই, সেখানে তাদের  কমিউনিটির স্বার্থ গৌনতর পরিলক্ষিত হয়। অথচ তারা এই কমিউনিটির নামভাঙিয়ে তাবেদারী করে বেড়ায়। এদেরকে সত্যিকারভাবে কমিউনিটির মানুষদের বয়কট করা উচিত। আমি কমিউনিটির সকল মানুষদেরকে প্রবাসী কমিউনিটির ভবিষ্যতের স্বার্থে মূলধারার কর্মকাণ্ডে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

আপনারা নেবারহুড কাউন্সিলসহ সিটি কাউন্সিল পরিমণ্ডলে প্রবেশ করুন এবং আপনাদের সকলের নি:স্বার্থ পদচারণায় এবং প্রচেষ্টায় গড়ে উঠবে লিটল বাংলাদেশ গ্রেট এবং প্রমাণ করতে সক্ষম হব একত্রে উই ক্যান ডু ইট ফর দ্যা কমিউনিটি, নট ফর সেলফ, লাইক আদারার্স। দু:খজনক আগামী দু বছরের জন্য ইলেকটের পদের জন্য শেষ সময় ছিল গত ২২শে জানুয়ারি ২০১৯, এবং কমিউনিটির উৎসাহি ব্যাক্তিবর্গদেরকে কেউ অগ্রিম জানায় নি। ফলে কমপার্ট নেবারহুড কাউন্সিলে মাত্র একজন শেষ মুহুর্তে অংশগ্রহণ করে কমিউনিটির মান রক্ষা করেছেন। তেমনিভাবে আরও একজন অংশগ্রহণ করেছেন কোরিয়ান নেবারহুড কাউন্সিলে। অথচ নির্বাচনীতে অংশগ্রহণের প্রচারণা চলেছে অনেক আগে থেকেই। তারা অনেক আগে থেকেই জানতেন প্রচারণা চলেছে কিন্তু কমিউনিটির অন্য কারও সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেন নি। তারা চাইলেই কমিউনিটিতে বিষয়টি প্রকাশ করে প্রচারণা বা উৎসাহিত করে আরও বেশি করে অংশগ্রহণের চেষ্টা করতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি। ফলে মূলধারায় পিছিয়ে গেল লিটল বাংলাদেশ কমিউনিটি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ঢাকা ক্লাবে ফ্রেন্ডস ক্লাব অব লস এঞ্জেলেসের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ
Next post ডাকসু নির্বাচন ১১ মার্চ
Close