Read Time:9 Minute, 44 Second

গত ১১ নভেম্বর রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসে ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপির উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপির সভাপতি মোঃ আঃ বাছিত। সঞ্চালনায় ছিলেন দলের সাধারন সম্পাদক বদরুল চৌধুরী শিপলু। বিএনপি’র এ আলোচনা সভায় দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক প্রবাসীরা উপস্হিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান, সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম সারোয়ার ও লিটিল বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী মাশহুরুল হক হুদা।

ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপির নেতৃবৃন্দরা বলেন, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের মানুষের যে রাজনীতি সেই রাজনীতিতে একটা মৌলিক পরিবর্তন এসেছিল। এই দিনে একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেই স্বাধীনতাকে সুসংহত করার একটা ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনগণ নিয়েছিল। এদিনে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃস্থাপিত হওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এ কারণে দিনটিকে আমরা সবসময় স্মরণ করে এসেছি, এ দিনটিতে আমরা স্বাধীনতার ঘোষক, বহুমাত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যিনি পুনরায় প্রবর্তন করেছিলেন সেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শপথ নিলাম। সভায় বক্তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ফরমায়েশি রায় বাতিলসহ তারেক রহমানের সাজা বাতিল করার দাবি জানায়।

আলোচকবৃন্দ বলেন, এদেশের ক্রান্তিকালে যেমন সিপাহ-জনতার বিপ্লব হয়েছিল। দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছিল। বর্তমানে দেশের এই রাজনৈতিক সংকটের সময় আবারো এদেশের জনতাকে সাথে নিয়ে এই সরকারকে বিদায় জানাতে হবে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে আর কোনো পথ সামনে খোলা নেই। আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটের অধিকার আদায় করে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। তার আগে দেশমাতা খালেদা জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করে আনতে হবে। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনায় বক্তারা দিনটিকে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার দিন উল্লেখ করে বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করলেও স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পেতে গোটা জাতিকে এই দিনটি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। যুদ্ধোত্তর দেশে তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী রাষ্ট্র পরিচালনায় সীমাহীন অযোগ্যতা, অদূরদর্শিতা ও পদলেহী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করায় রক্তে অর্জিত স্বাধীনতাই বিপন্ন হতে বসেছিল। একদিকে শাসকদের সীমাহীন বাধাহীন লুটপাট অন্যদিকে বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক কর্মীদের গণহত্যা দেশকে এক দূর্বিষহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়। এ পরিস্থিতিতে সপরিবারে তৎকালীন সরকার প্রধানকে ও পরে কারারুদ্ধ জাতীয় চার নেতাকে হত্যা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির উত্থানকে যখন নিশ্চিত করে তুলছিল, সেই মুহূর্তে দেশপ্রেমিক সিপাহী জনতার সম্মিলিত বিপ্লবে আমাদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষা পায়। আর সেই ক্রান্তিকালে দেশের হাল ধরেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তিনি দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উন্নয়ন ও উৎপাদনে শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপির নেতারা বলেন, সেই সময়ের মতো আজও দেশ এক চরম সংকটে। তারা গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে রাখা আওয়ামীলীগকে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দেয়া ৭ দফা মেনে নেয়ার আহবান জানিয়ে তারা বলেন, সংলাপের মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত দাবিসমূহ মেনে নেয়া না হলে আপনাদেরকেও অসম্মানজনক ভাবে বিদায় নিতে হবে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ন্যূনতম শর্ত এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পরও বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে, যা নির্বাচনি আচরণবিধির সুস্পষ্ট লংঘন। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে সাবেক নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদাসহ প্রায় সকল দল ও জনগণের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সরকার ও নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করেনি। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে একটা অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। তাই বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত খুবই কঠিন। এরকম ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

লস এঞ্জেলেসে ক্যালিফোর্ণিয়া বিএনপি আয়োজিত বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় উপস্হিত ছিলেন- মোঃ আঃ বাছিত, বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু, সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন দিলির, নজরুল ইসলাম চৌধুরী কাঞ্চন, খন্দকার আলম, আবুল ইব্রাহিম, মুর্শেদুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান শাহীন, সালাম দাঁড়িয়া, মানিক চৌধুরী, মাতাব আহমদ, আব্দুল হাকিম, মিশর নুন, আবু তাহের সাজু, এ আর মাহবুবুল হক, মুরাদ হামিদ খান সানী, সাইদ আবেদ নিপু, ফারুক সরকার, খন্দকার তসলিম, মোঃ সামছুল ইসলাম, জহিরুল কবির হেলাল, মোঃ শাহজাহান, হাসানুজ্জামান মিজান, বাদল, সৈয়দ নাসিরউদ্দিন জেবুল, মোয়াজ্জেম আহমেদ রাসেল, মারুফ খান, ইলিয়াস মিয়া, লায়েক আহমেদ, বদরুল আলম মাসুদ, শাহীন হক, শাহতাব কবির ভূঁইয়া শান্ত, নাঈমুল ইসলাম চৌধুরী, হোসেন আহমেদ, রেজাউল হায়দার চৌধুরী, হুমায়ুন কবির, মিজানুর রহমান, খসরু রানা, শাহানুর কবির ভুঁইয়া শুভ্র, আজমউদ্দিন চৌধুরী দুলাল, সুমেন আহমেদ, রেজাউল করিম জামিল, জুয়েল আহমেদ, কামরুল হাসান তরুন, মিকায়েল খান রাসেল, খায়রুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ, জাভেদ বখত্ , আবদুল মোতালেব, আলতাফ হোসেন, আহসান আহমেদ, মিল্টন খান, ওমর ফারুক, কামাল হোসেন, ফয়সল হোসেন সিদ্দিক, আমজাদ হোসেন, খোরশেদ আলম রতন, জিল্লুর রহমান চৌধুরী, তারেক খান, রওনক সালাম, তাসনুভা বেগম, রুহুল আমিন বাবু, সাজ্জাদ পারভেজ, হেলাল মজুমদার, ইসলাম উদ্দিন, শাহেদ আহমেদ, সিদ্দিক আহমেদ, জুনেল আহমেদ, মোঃ গোলাম সারোয়ার হোসেন, ইলিয়াস শিকদার, আবুল বাশার, আবদুল আহাদ, আবদুল হাকিম, কামরুল আলম চৌধুরী, গিয়াস আহমদ, মজিবর রহমান, ফখরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, মোঃ শামীম উদ্দিন, আবদুল মুনিম, আশিকুর রহমান, হাবিবুর রহমান, আবদুল হাসিব বাবুল প্রমুখ।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post মূকাভিনয় ও বিশ্বায়ন : কাজী মশহুরুল হুদা
Next post রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চি’র কঠোর সমালোচনায় মাহাথির
Close