মৃত্যুর পরে আপনার কবর কোথায় হবে, সেটি কি কখনো ভেবেছেন? তানজানিয়ার নজোম্বের বাসিন্দা অ্যান্টন মান্দুলানি সেটা চিন্তা করে নিজের এবং তার তিনজন স্ত্রীর জন্য এরমধ্যেই সমাধি তৈরি করে রেখেছেন। অথচ তার সমাজে মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে খুব একটা কথা বলা হয় না। তাই মান্দুলানি চান, তার সমাজের লোকজনকে মৃত্যুর পর যেভাবে স্মরণ করা হয়, তার ক্ষেত্রে যেন সেটা ব্যতিক্রমী হয়।
বাইরে দেখে নির্মাণ কাজের ধরণ দেখে মনে হবে যেন কোন বাড়ি বানানো হচ্ছে, তবে ভেতরের চিত্র যে কাউকে চমকে দেবে। সেখানে রয়েছে ১২ মিটার গভীর একটি সমাধি, যা হবে অ্যান্টন মান্দুলামি এবং তার তিন স্ত্রীর মৃত্যুর পরের ঠিকানা। আটবছর ধরে এই সমাধির কাজ চলছে।
অ্যান্টন মান্দুলামি বলছেন, আমি এই সমাধি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ আমি চাই না মানুষ আমাকে ভুলে যাক। সবমিলিয়ে এখানে এক হেক্টর জায়গা আছে, যেখানে আমি এবং আমার তিন স্ত্রীর সমাধি হবে। এটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এখান থেকে জানতে পারবে, আমি এই পরিবারের জন্য কি ছিলাম।
মান্দুলামির বড় স্ত্রী ডামিয়ানা উইকেচ বলছেন, আমার মতে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, তিনি চমৎকার একটি কাজ করেছেন। মৃত্যুর পরে নিজের থাকার জায়গাটি তিনি নিজেই তৈরি করে নিচ্ছেন। তার একজন স্ত্রী হিসাবে, এটা আমার জন্য ঠিক আছে, আমি খুশি, কারণ আমাদের একস্থানে সমাধি হবে।
মান্দুলামি বলছেন, এই প্রকল্পের পেছনে তিনি পাঁচ হাজার ডলার খরচ করেছেন, যা শেষ হতে আরো চারবছর সময় লাগবে। কিন্তু দরিদ্র একটি গ্রামে এভাবে হাজার ডলার খরচ করে সমাধিস্থান তৈরি করার বিষয়টি সবারই নজরে পড়েছে। এ নিয়ে গ্রামের প্রতিবেশী বাসিন্দাদের রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গ্রামের বাসিন্দা জোনাস মেহেমা বলছেন, আমি মনে করি, এটা ঠিকই আছে। কারণ যখন থেকে তিনি প্রথাগত হার্বালের ব্যবসা শুরু করেন, তখন থেকেই তিনি বলেছেন যে, তিনি ইতিহাস তৈরি করতে চান, যাতে মৃত্যুর পরেও মানুষ তাকে ভুলে না যায়।
গ্রামটির আরেকজন বাসিন্দা ভিক্টর নায়াগাওয়ার বলছেন, এটা এমন একটা কাজ যা আমাকে খুবই উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আমি কখনো দেখিনি কেউ এত অর্থ খরচ করে নিজের সমাধি কেন্দ্র তৈরি করছে। আমার মতে, নেতাদের ক্ষেত্রে এটা গ্রহণীয় হতে পারে, যেমন আমাদের জাতির পিতার জন্য, কিন্তু আমি খুবই অবাক হয়েছি যে, স্থানীয় একজন বাসিন্দা এরকম বিশাল কবরস্থান তৈরি করছে।
এই সমাধি কেন্দ্রই একমাত্র বিষয় নয়, যা তানজানিয়ার মানুষের মধ্যে আলোচনা তৈরি করেছে। মান্দুলামির অপর ইচ্ছা, যে মৃত্যুর পরে তার দেহ মমি করা হবে এবং প্রকাশ্যে সেটি প্রদর্শন করা হবে, যা নিয়ে তৈরি করেছে বিতর্ক।
যে সমাজের সংস্কৃতিতে মৃত্যু নিয়ে বেশি প্রস্তুতি দুর্ভাগ্য ডেকে আনে বলে মনে করা হয়, সেখানে এই সমাধি কেন্দ্র নিঃসন্দেহে সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি আলোচনা তৈরি করতে যাচ্ছে।
More Stories
মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট সেবা উদ্বোধন
মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরের সাউথগেটে অবস্থিত কমার্শিয়াল সেন্টারের আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের অফিসে এই...
লস এঞ্জেলেসে সপ্তম আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলন’র প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
প্রবাস বাংলা ডেস্ক, লস এঞ্জেলেস থেকে, শামসুল আরিফীন বাবলু: ক্যালিফোর্নিয়া’র লস এঞ্জেলেসে ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী...
এমভি আবদুল্লাহকে যেভাবে পাহারা দিচ্ছে ২ যুদ্ধজাহাজ
সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী। বাহিনীর...
লস এঞ্জেলেসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন
লস এঞ্জেলেসস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উদযাপন করে।...
মালয়েশিয়ায় সরাসরি পাসপোর্ট পেলেন দেড় হাজার প্রবাসী
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সরাসরি পাসপোর্ট পেলেন দেড় হাজার প্রবাসী। শনি ও রোববার দেশটির ছুটির দিনে হাইকমিশনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় প্রবাসী...
নিলামে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পেইন্টিং সোয়া চার কোটি টাকায় বিক্রি
সম্প্রতি নিউইয়র্কে এক নিলামে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের দুটি পেইন্টিং বা চিত্রকর্ম রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ‘সাঁওতাল দম্পতি’ চিত্রকর্মটি...