জুন মাসের শুরুতে ইঙ্গিত ছিল। জুলাইয়ের শেষে তার ফলাফল দেখা গেল। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতির প্রশ্নে নিঃশব্দ বদল এনে চীন-বিরোধিতাকে লঘু করতে উদ্যোগী হয়েছে নয়াদিল্লি।
সিঙ্গাপুরে ১ জুন শাংগ্রি লা সংলাপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, এই মহাসাগরীয় অঞ্চলকে তিনি কখনওই ‘হাতে গোনা কিছু সদস্য দেশের কৌশলগত ক্ষেত্র বা ক্লাব’ হিসেবে দেখেন না। তখনই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল, চীনের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়েই মহাসাগরীয় নীতি তৈরি করা হবে।
সূত্রের খবর, ৩০ জুলাই জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার উদ্যোগে ওই অঞ্চলেই পরিকাঠামো সংক্রান্ত যে প্রকল্প ঘোষণা হয়, তাতে থাকার কথা ছিল ভারতেরও। কিন্তু ওই প্রকল্প থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে নয়াদিল্লি।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে আমেরিকার সঙ্গে যে ২+২-এর বৈঠকটি হতে চলেছে, সেখানে প্রসঙ্গটি ফের উত্থাপন করে ভারতের উপর চাপ তৈরি করবে ওয়াশিংটন। বলা হবে ওই উদ্যোগে শামিল হতে। সেখানে কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, তার প্রস্তুতি শুরু করেছে সাউথ ব্লক।
এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যে ত্রিপাক্ষিক প্রকল্পটি শুরু হল, তাকে চীনের ওবর প্রকল্পের পাল্টা হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। এটা ঘটনা যে ভারত এখনও ঘোষিতভাবে ওবর-এর বিরোধী। কিন্তু একই সঙ্গে তারা এই মুহূর্তে নতুন করে এমন কোনও বার্তাও বেজিংকে দিতে চায় না যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আবার সঙ্কট তৈরি হয়।
উহানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকের পর থেকেই ডোকলাম-ক্ষতে প্রলেপ দিতে তৎপর হয়েছে সাউথ ব্লক। মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে নেতৃত্ব দান থেকেও ধীরে ধীরে পিছু হঠেছে মোদি সরকার। শাংগ্রি-লায় তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোনও বিশেষ দেশের (চীন) বিরুদ্ধাচরণ করা তার কাম্য নয়।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ভারতের এই পরিবর্তিত অবস্থান ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর কাছে হতাশাজনক হলেও নয়াদিল্লি এক্ষেত্রে নাচার। ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে জাতীয় বাধ্যবাধকতার দিকটি বিবেচনা করে শক্তিশালী প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে নরম নীতি নিয়েই এগোনোটাই এখন বিজেপি সরকারের কাছে জরুরি।
অথচ গত নভেম্বরে সাড়ম্বরেই এই তিনটি দেশের (জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকা) সঙ্গে চতুর্দেশীয় জোট গড়েছিল ভারত। উদ্দেশ্য ছিল, চীনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ‘মুক্ত এবং অবাধ’ এবং ‘আঞ্চলিক সংযোগকে শক্তিশালী’ করতে জাপান এবং জাপান-অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পৃথক আলোচনাও করেছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু এরপরই চীনের সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক সহজ করার পথে হাঁটতে থাকে ভারত সরকার। সূত্র : আনন্দবাজার
More Stories
এরদোয়ান জয়ী
তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। রোববার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৫২ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট পেয়ে...
বিশ্বের সেরা পাসপোর্ট আমিরাতের
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাসপোর্ট বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সেরা পাসপোর্টের খেতাব জিতে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ, দ্বৈত...
এরদোগানের দিন শেষ?
তুরস্কে এরদোগানের দুই দশকের শাসনের অবসানের সময় যেন ঘনিয়ে এসেছে। যেন অস্তগামী এরদোগানের শাসনকাল। আধুনিক তুরস্কের একশো বছরের ইতিহাসে রোববারের...
জেলেনস্কিকে কাছে পেয়ে যা বললেন পোপ ফ্রান্সিস
আগ্রাসন থেকে পিছিয়ে আসেনি রাশিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধে ইতি পড়েনি এখনো। সীমিত ক্ষমতা নিয়ে রাশিয়ার মতো বিরাট শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই জারি...
পাকিস্তানজুড়ে ‘স্বাধীনতা’ বিক্ষোভের ডাক দিলেন ইমরান খান
দেশজুড়ে ‘স্বাধীনতা’ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় জামিন পেয়ে শনিবার...
জামিন পেলেন ইমরান খান
আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় জামিন পেয়েছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার (১২ মে) তাকে দুই সপ্তাহের জন্য...