Read Time:7 Minute, 58 Second

যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন ‘আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ (এবিপিসি) এর এক মতবিনিময় সভায় ভোরের কাগজ সম্পাদক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব শ্যামল দত্ত বলেছেন, ‘বাংলাদেশে টিভি টক’শো এখন বিনোদনে পরিণত হয়েছে। মানুষ এটাকে খুব উপভোগ করে। আর এজন্য গভীর রাতেও তারা টিভি সেটের সামনে বসে টক’শো দেখেন।’

সাংবাদিক ও ভাষ্যকার শ্যামল দত্ত বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে যখনই নির্বাচন আসে তখনই নানান অপতৎপরতা শুরু হতে দেখা যায়। এখনও এক ধরনের গুমোট ভাব বিরাজ করছে। তাই সকলের সজাগ থাকা উচিত।

শ্যামল দত্ত বলেন, ‘নিরপেক্ষতার নামে অনেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির জনক নিয়ে দলবাজি করতে চান। এটি হতে পারে না। এগুলো স্যাটেলড। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে জাতির জনকের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে-এটি চিরসত্য।

স্থানীয় সময় রবিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নিউ মেজবান রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক ছাড়াও বাংলাদেশি কম্যুনিটির বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরা ছিলেন।

এতে বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং প্রবাসীদের অধিকারসহ নানান বিষয় উঠে আসে। এসব বিষয়ে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন শ্যামল দত্ত।

বাংলাদেশের মিডিয়ায় অস্থিরতা প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত বলেন, বিশ্বের আর কোনো দেশে বাংলাদেশের মত এত গণমাধ্যম নেই। অথচ সাংবাদিকতায় এখনো পেশাদারিত্ব গড়ে ওঠেনি। কারণ অধিকাংশ মিডিয়ার মালিক রাজনীতিবিদ অথবা ব্যবসায়ী। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েও এখন আর কেউ এই পেশায় আসতে সাহস পাচ্ছে না। এ পেশাকে সিকিউর্ড মনে করছেন না।

সাম্প্রতিক কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশে কোটার অবশ্যই প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে নারীরা অবহেলিত। চাকরিতে তাদের বিশেষ কোটা থাকা উচিত। তা না হলে সমাজ থেকে নারী-পুরুষের বৈষম্য কখনোই দূর হবে না। তিনি বলেন, একাত্তরে কৃষক ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের সন্তানেরা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। অথচ বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা বয়সজনিত ও নানা কারণে সরকারি চাকরিতে উপেক্ষিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য চাকরিতে অবশ্যই কোটা থাকা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে শ্যামল দত্ত আরো বলেন, বাংলাদেশে একটি বিশেষ অঞ্চলের লোক সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধান হচ্ছেন। অথচ দেশের অনেক জেলার লোক এ সুযোগটি পাচ্ছেন না। এজন্যও জেলাভিত্তিক নিয়োগেও কোটা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রাণবন্ত এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন নবগঠিত বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া, পিপল এন টেকের সিইও আবু বকর হানিফ, স্বাধীন বাংলা বেতার কন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হুসাইন, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি রাশেদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বারী, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের (জেবিবিএ) পরিচালক আবুলফজল দিদারুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী সদস্য সাদী মিন্টু, বিশিষ্ট সমাজসংগঠক কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, সাপ্তাহিক বর্ণমালার প্রধান সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, প্রেসক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর শিবলী, কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, কার্যকরী সদস্য নিহার সিদ্দিকী, কানু দত্ত, প্রেসক্লাবের নির্বাচন কমিশনার ও ভয়েজ অব আমেরিকার নিউইয়র্ক প্রতিনিধি আকবর হায়দার কিরণ, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিজানুর রহমান, সাজ্জাদ হোসাইন, জাহেদ শরীফ, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, হেলাল মাহমুদ। এছাড়াও ছিলেন মূলধারার রাজনীতিক খোরশেদ খন্দকার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাঈদ হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের সেক্রেটারি এটিএম মাসুদ রানা। আরো ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, এনামুল হক, নূরল ইসলাম, আব্দুল আওয়াল, লিয়াকত আলী, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ প্রমুখ।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আমন্ত্রণে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন শ্যামল দত্তসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও শ্রম দপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় নবগঠিত ‘বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন’র যুক্তরাষ্ট্র শাখার সার্বিক সহায়তায়। তাই প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে এ সংগঠনের সভাপতি ড. মনসুর খন্দকার এবং সেক্রেটারি হাজী আব্দুল কাদের মিয়াকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ঐতিহাসিক ক্যালিফোর্নিয়া যুবলীগের সম্মেলন!
Next post সৌদিতে গাড়িচাপায় বাংলাদেশি নিহত
Close