উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরো এক বছর বাড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের ১০ দিনের মাথায় গত শুক্রবার তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র এখনো ‘মারাত্মক হুমকির’ পর্যায়ে রয়েছে। যদিও উনের সঙ্গে বৈঠকের পর ঠিক উল্টোটাই বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দুটি সামরিক মহড়া স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওয়াশিংটন-পিয়ংইয়ং শান্তি আলোচনায় সহযোগিতা করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
গত ১২ জুন সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেন ট্রাম্প ও উন। সেখানে দুই নেতা একটি ‘প্রতিশ্রুতিপত্রে’ সই করেন। তাতে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে আর পিয়ংইয়ং কাজ করবে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে।
বৈঠকের পরের দিন ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় লেখেন, ‘পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়া থেকে আর কোনো হুমকি নেই।’ তিনি আরো লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের আজ রাতে ভালো ঘুম হবে।’
কিন্তু গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর কারণ হিসেবে উল্টো কথা বলেন ট্রাম্প। মার্কিন কংগ্রেসে পাঠানো এক নোটিশে ট্রাম্প বলেন, ‘কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার উপযোগী পদার্থের (ফিসাইল ম্যাটেরিয়াল) অস্তিত্ব রয়েছে। ওই পদার্থ দ্রুত বিস্তারের ঝুঁকি আছে। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়া সরকারের নীতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক এক হুমকি। এ কারণে আমি উত্তর কোরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরো এক বছরের জন্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে একই দিনে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দুটি যৌথ সামরিক মহড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জো ডানফোর্ড এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর—পেন্টাগনের মুখপাত্র ডানা হোয়াইট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ট্রাম্প-উন বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে জিম ম্যাটিস দুটি নির্দিষ্ট সামরিক মহড়া স্থগিত করেছেন।’
উল্লেখ্য, উনের সঙ্গে বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এ ছাড়া ওই মহড়াকে ‘উসকানিমূলক’ বলেও অভিহিত করেন তিনি, যা তাঁকে সমালোচনার মুখে ঠেলে দেয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার সামরিক মহড়াকে শুরু থেকেই উসকানিমূলক বলে দাবি করে আসছে চীন ও উত্তর কোরিয়া।
সূত্র : বিবিসি, এএফপি।
More Stories
যুদ্ধাপরাধ বন্ধে পুতিনকে চাপ দিতে জিনপিংকে আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চাপ দিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা...
সমঝোতায় প্রস্তুত রাশিয়া, শিকে পুতিন
রাশিয়া সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ক্রেমলিনে স্বাগত জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে ক্রেমলিনে পৌঁছান...
বাড়িতে ‘হামলাকারী’ পুলিশদের দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি ইমরান খানের
এবার পুলিশকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। ইমরান খান বলেন, লাহোরে তার...
পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে মস্কো যাচ্ছেন জিনপিং
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো সফর করবেন। শুক্রবার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে...
ইমরানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করেছেন ইসলামাবাদ...
কাবার আদলে স্বর্ণের বার বাজারে আনল ব্রিটিশ সরকার
রমজানে মুসলমান ক্রেতাদের লক্ষ্য রেখে পবিত্র কাবার আদলে স্বর্ণের বার বাজারে এনেছে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘দ্য রয়্যাল মিন্ট’। বুধবার আরব...