Read Time:5 Minute, 28 Second

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের একটা আশা ছিল দেশনেত্রীকে আটক করতে পারলে বিএনপি ভেঙে যাবে। বিএনপি ভাঙেনি। বিএনপি আরো শক্তিশালী হয়েছে। আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনার সভার সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে গণতন্ত্র অর্জন করেছিলাম সেই গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে লুণ্ঠিত করা হয়েছে। অপহরণ করা হয়েছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ তাদের সমস্ত অধিকারহারা হয়েছে। তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মুক্তদেশে সুন্দরভাবে বাস করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের যে মানুষটি গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করলেন, যে নেত্রী অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে মুক্ত করে নিয়ে আসলেন, সেই নেত্রীকে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দিন কাটাতে হচ্ছে। যখন রাজশাহীতে হেলিকপ্টারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভোট চাচ্ছেন সরকারি টাকা খরচ করে, তখন খালেদা জিয়াকে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে দিন কাটাতে হচ্ছে। এটা কখনো গণতন্ত্র হতে পারে না। এটা সমান মাঠ হতে পারে না। এ অবস্থা আমাদের বদলে দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাংলাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। খুন করা হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর গণতন্ত্রের জন্য আমরা এই সংগ্রাম করছি। খালেদা জিয়া সেই সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আজকে তিনি কারাগারে। আমরা যারা বাইরে আছি আমাদের একমাত্র লক্ষ্য নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করে, সমস্ত শক্তি সংগঠিত করে, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

ফখরুল বলেন, এখন আমাদের পরীক্ষার সময়। এত পরীক্ষা জাতিকে কখনো দিতে হয়নি। আজকে আমরা যে সংগ্রাম করছি এটা বিএনপির জন্য সংগ্রাম নয়। খালেদা জিয়ার জন্য সংগ্রাম নয়। এই সংগ্রাম দেশকে রক্ষা করার সংগ্রাম। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য সংগ্রাম। এ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম। বর্তমান পরিস্থিতি ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে বিজয় অর্জন করব বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা জানি সরকার আমাদের অনেক উসকানি দেবে ফাঁদে ফেলার জন্য। কোনো ফাঁদে আমরা যেন পা না দেই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। একই সঙ্গে আমরা গণতন্ত্রকে মুক্ত করব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী সদস্য কমিটির ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম), ইনাম আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, মনিরুল হক চৌধুরী, গোলাম আকবর খন্দকার প্রমুখ।

ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ নেছারুল হকের কোরান তেলাওয়াত ও দোয়া মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভা শুরু হয়। এতে সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। সভাপতির বক্তব্যের আগে বন্দি খালেদা জিয়াকে নিয়ে একটি গান পরিবেশন করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক কণ্ঠশিল্পী বেবি নাজনীন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post লস এঞ্জেলেস বাংলাদেশ কন্সুলেটে একুশের অনুষ্ঠানে দুর্ঘটনা
Next post মালয়েশিয়ায় দূতাবাসের উদ্যোগে গণশুনানী ও মতবিনিময় সভা
Close