Read Time:5 Minute, 0 Second

– কাজী মশরুল হুদা

বিজয়ের ৫৫ বছর হতে চলেছে। প্রায় ২ কোটির মত প্রবাসী বাংলাদেশী বিশ্বজুড়ে বসবাস করছে। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে লাখ লাখ বাংলাদেশীর বসবাস। স্বাধীনতা চলাকালীন আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশী বেশিরভাগ বসবাস করত নিউ ইয়র্কে এবং লস এঞ্জেলেস এলাকায়। লস এঞ্জেলেসে পূর্ব-পাকিস্তান থাকাকালীন কিছু ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে পড়ালেখা করতে আসেন। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন বাংলাদেশের ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার পর থেকে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রধান শহর লস এঞ্জেলেসে বাংলাদেশীদের আগমন শুরু হয়। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বাংলাদেশী কমিউনিটি।
১৯৮৫ সালের দিকে প্রথম হলিউডে একুশ উদযাপন করা হয়। ধীরে ধীরে সাংস্কৃতিক মানুষের সহায়তায় নতুন প্রজন্মের মাঝে সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়া জন্য শুরু হয়- বাংলা পাঠশালা, বাংলাদেশ একাডেমী। বেশ কয়েকটি কমিউনিটির পত্রিকা প্রকাশিত হয়। বাংলাবার্তা, ভিন্নমত, একুশে ও আমার পক্ষে পত্রিকা পত্রিকা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও কমিউনিটির কার্যক্রম চলতে থাকে। কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতা দিবস পালনের নিমিত্তে তৈরি হল- বাংলাদেশ ইউনিটি ফেডারেশন অব লস এঞ্জেলেস। এই বাফলার মাধ্যমে প্রতি বছর বাংলাদেশ ডে প্যারেড অনুষ্ঠিত হয় লস এঞ্জেলেসের প্রধানতম রাস্তা বন্ধ করে প্যারেড বাংলাদেশের পরিচিতিকে এগিয়ে নিয়ে যায় মূলধারায়। মূলধারার পলিটিশিয়ানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশ কমিউনিটির উপর। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে স্টেট অব লিটল বাংলাদেশ।
লিটল বাংলাদেশের সৃষ্টির পর কমিউনিটির পরিচিতি বেড়ে ওঠে। শুরু হয় বৈশাখী মেলা, রবীন্দ্র সম্মেলন, নজরুল সম্মেলন একাধিকবার ফোবানা ইত্যাদি কমিউনিটির পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।
লস এঞ্জেলেস কমিউনিটির সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো- কন্সুলেট জেনারেল অফিস। কারণ আজ বাংলাদেশ কন্সুলেট অফিস বাংলাদেশের নিজস্ব ভবন। এমনকি কন্সল জেনারেলের বাসভবনও বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব রিয়েলস্টেট।
লস এঞ্জেলেসের লিটল বাংলাদেশকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ছোট্ট একটুকরো বাংলাদেশ, যেখানে রয়েছে বাংলাদেশের বিউটিফিকেশন। দেশীয় খাবারের রেস্টুরেন্ট ও পণ্যের দোকান রয়েছে বেশ কয়েকটি। এমনকি একটি মসজিদ নির্মাণও হয়েছে কমিউনিটির জন্য। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ মন্দির এবং বৌদ্ধ ও খৃষ্টানদের ধর্মীয় উপাসনালয়ও রয়েছে।
এগুলো হলো প্রথম প্রজন্মের মানুষের পরিশ্রমের ফসল। দ্বিতীয় প্রজন্ম এই প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে আজ যুগের সঙ্গে তালমিলিয়ে মেধার সংস্পর্শে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তার ঘটাচ্ছে। লস এঞ্জেলেসের মানুষ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে বিভিন্ন কাউন্টিতে। অনেক সফল ব্যবসায়ী ও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ডিগনেটরীর মানুষ সেই সকল এলকায় তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন। সম্প্রতি সিটি অব প্যারিস এ সিটি কাউন্সিলের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার।


লস এঞ্জেলেসের লিটল বাংলাদেশ এখন আমেরিকার বুকে বাংলাদেশের মাইলস্টোন হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। ফ্রি ওয়েতে দিক নির্দেশে দেখা যায় লিটল বাংলাদেশের সাইন। ৫৫ বছরের ইতিহাসে লিটল বাংলাদেশ এই কমিউনিটির একটি প্রত্যাশার প্রাপ্তি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post নতুন করে শপথ নিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শফিকুর রহমান
Next post খালেদা জিয়ার সবশেষ অবস্থা নিয়ে যা জানালেন তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা
Close