Read Time:5 Minute, 46 Second

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নতুন বাংলাদেশের ‘ইশতেহার’ পাঠের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘রোববার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে এবং সেখানে এনসিপির নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার পাঠ করা হবে।’

শনিবার (২ আগস্ট) দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সময় শহীদ মিনার থেকে সরকার পতনের এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের এক দফা দাবি ঘোষিত হয়েছিল। যে এক দফার মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। আমরা আমাদের পদযাত্রার মধ্যেও স্পষ্ট করেছি, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতন হয়নি। ফলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বা নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণের যে লড়াই, সেটি আমাদের এখনো চালিয়ে যেতে হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশের জন্য আমাদের যে কর্মসূচি ও যে রাষ্ট্র ভাবনার রূপকল্প রয়েছে, তা আমরা রোববার প্রকাশ করব।’

তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে দেশ গড়তে আমরা ১ জুলাই থেকে জুলাই পদযাত্রা নামের কর্মসূচি পালন করি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ৫৯টি জেলায় আমাদের পদযাত্রা হয়েছে। আমরা প্রত্যেক জায়গায় গিয়েছি, মানুষের কথা শুনেছি। অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া পরিবারের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করেছি। আহত যোদ্ধা, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমরা গণমানুষের কাছে গিয়েছি। গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা, দেশ নিয়ে তাদের ভাবনা এবং একটা নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের কাছে তাদের প্রত্যাশা আমরা শুনেছি।’

নাহিদ বলেন, ‘এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি এবং আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা আমরা তৈরি করেছি। শহীদ মিনারে আমরা সেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা এবং আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করব। বিকেল ৪টায় শহীদ মিনারে জনসমাবেশের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। আমরা সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি, ঢাকার এই সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য।’

ইশতেহারে কী থাকছে, এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘আমরা তরুণদের নিয়ে পরিকল্পনা, অর্থনীতি নিয়ে পরিকল্পনা, দেশের আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, প্রশাসন নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা ইশতেহারের মাধ্যমে জানাব। গত এক বছরের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলব। একই সঙ্গে আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে যে পরিকল্পনা রয়েছে, সে পরিকল্পনাও আমরা প্রকাশ করব।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রথম তোলা হয়। তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা যে ঘোষণাপত্র তৈরি করি, তার একটা খসড়া সরকারের কাছে দেই। এ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলো তাদের খসড়া ঘোষণাপত্র দেয়। সরকার এখন সবগুলো সমন্বয় করে একটা ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করবে। আমাদের জায়গা থেকে আমরা বলেছি, ঘোষণাপত্রের অবশ্যই সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে। আমরা আশা করছি, সরকারের জায়গা থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। সব রাজনৈতিক দল এ বিষয় সমর্থন এবং প্রতিশ্রুতি দেবে।’

আগামী ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় জাতির সামনে জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগের স্বাগত জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, গণঅভ্যুত্থানের সব শক্তি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে আগামী ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। আমরা সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি আমাদের দাবি ছিল, ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদের বিষয়টিও যাতে সুরাহা হয়।’

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post বাংলাদেশের ওপর নিবিড় নজর রাখছি : জয়শঙ্কর
Next post প্রবাসীদের জন্য হাসপাতাল হচ্ছে: আসিফ নজরুল
Close