আগামী দিনে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন গুম-খুন এবং জুলাই বিপ্লবে নির্যাতন ও হত্যার বিচার অবশ্যই করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার (১৬ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলন গুম ও শহীদ পরিবারদের নিয়ে ইফতার মাহফিলে ভাচুর্য়ালি যুক্ত হয়ে তিনি একথা জানান। ইফতার মাহফিলের আয়োজক ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।
তারেক রহমান বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, বিএনপিকে যদি জনগণ আগামী দিনে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেয় তাহলে রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে গুম-খুন নির্যাতনের বিচার করা। বিগত ১৬ বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যারা গুম-খুনের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, অনেকে নির্যাতিত হয়েছেন এবং জুলাই বিপ্লবে যাদের হত্যা করা হয়েছে, সেই হত্যার বিচার অবশ্যই করবো, ইনশাআল্লাহ।
শহীদ পরিবার সদস্য ও নির্যাতিত ব্যক্তিদের উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আপনার দয়া করে হতাশ হবেন না, আশা রাখবেন। আমরা এতটুকু যখন আসতে পেরেছি, সামনের পথটুকু পাড়ি দিতে পারব। আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি, সবাই যদি অন্যায় বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকি অবশ্যই এই অন্যায়ের বিচার করতে সক্ষম হবো। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে সব রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করবে না। গণতন্ত্র, গণতন্ত্র রক্ষা, মানুষের বাকস্বাধীনতা এবং নির্যাযিত ব্যক্তিবর্গের ন্যায়বিচার করা- এই বিষয়গুলোর প্রতি গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা, আগামী দিনে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত দেবেন কারা সরকার গঠন করবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী দিনে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যারা পাবেন, যে রাজনৈতিক দল পাক না কেন তাদের কর্মসূচির মধ্যে থাকবে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, যে পরিবারগুলো নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের অব্যশই এই অন্যায়ের ন্যায়বিচার করতে হবে। যেকোনো মূল্য সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আগামী দিনে যদি অন্যায়ের সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার না করতে পারি হয়তো বা দেশে আবারও অন্যায় সংঘঠিত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার দেওয়ার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি- যে অন্যায়কারী, যে ন্যায়ের বিরুদ্ধে যাবে তাকে দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
বক্তব্য শুরুতে গুম-খুন ও নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা এবং শহীদ ও আহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজকে মুক্ত বাংলাদেশ। জনগণ মুক্তভাবে শ্বাস নিতে পারছেন। এই দেশের রাজনৈতিক অধিকারের পাশাপাশি অর্থনীতির অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সংক্ষেপে বললে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যেটি বিগত স্বৈরাচার সরকার ছিনিয়ে নিয়েছিল। বাংলাদেশ জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারা যে প্রত্যাশা নিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য যুদ্ধ করেছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন তাদের সেই প্রত্যাশা যেন পূরণ করতে পারি, পরিবার সদস্যদের কাছে সেই দোয়া চেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
More Stories
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
ভারতে হাসিনার অবস্থান নিয়ে জয়শঙ্কর বললেন— সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লিতে অবস্থান করা নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী...
কেউ যেন আমাদের ওপর কোনো দাদাগিরি করতে না আসে: ডা. শফিকুর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ভয় করি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে। বাকি যাদের কথা বলেন, তাদেরকে আমরা...
পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এগিয়ে যাবে: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয়...
ছাত্রশক্তির নেত্রী জেদনীকে বিয়ে করলেন এনসিপির হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বিয়ে করেছেন জাতীয় ছাত্রশক্তির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামলী...
