জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার (গুতেরেস) এ সফর ভুল তথ্য ও অপতথ্য প্রচারণা এবং বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টার বিপরীতে দেশের ইতিবাচক ও শক্তিশালী ভাবমূর্তি গড়ে তুলবে।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং বাংলাদেশের ‘সত্যিকারের রূপান্তরের’ জন্য সংস্কার প্রক্রিয়ার জটিলতার কথা স্বীকার করেন তিনি।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সংস্কার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের পূর্ণ অঙ্গীকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য তিনি (গুতেরেস) যা কিছু করতে পারেন তা করবেন এবং বাংলাদেশ ও এর জনগণের পাশে দাঁড়াবেন।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সমর্থনের আশ্বাস বাংলাদেশের জনগণের অভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের সফল সংস্কার প্রক্রিয়া এবং গণতন্ত্রে উত্তরণে সহায়ক হবে।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য জনগণের আকাঙ্ক্ষা বোঝার জন্য মহাসচিব যুব, সুশীল সমাজ এবং সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে তিনটি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এই গোষ্ঠীগুলোর অবদান দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পরিকল্পনা জুলাই সনদের পথ প্রশস্ত করছে এবং রাজনৈতিক, বিচার বিভাগীয়, নির্বাচনী, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন এবং পুলিশ খাতে সংস্কারের রূপায়ণ করছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ইউএনএসজির রমজান সলিডারিটি ভিজিট জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৫০ বছর পূর্তিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ উভয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
তিনি বলেন, ন্যায়পরায়ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের আকাঙ্ক্ষায় জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সর্বোচ্চ ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে মহাসচিব নিজেই নতুন বাংলাদেশের গঠনমূলক পর্যায় প্রত্যক্ষ করছেন।
তিনি আরো বলেন, পরিদর্শনকালে মহাসচিব কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন এবং তাদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ক্যাম্পগুলোতে গুতেরেস রোহিঙ্গা শিশু ও তরুণদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তারা কীভাবে বহুমুখী কর্মদক্ষতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের টিকে থাকার প্রস্তুতি নিতে হয় এবং তাদের মাতৃভূমিতে সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের জন্য শেখার সুযোগ তৈরি করে তা প্রত্যক্ষ করেন।
প্রধান উপদেষ্টাসহ এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব অনন্য ঐতিহাসিক সংহতি ইফতার করেন।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
