রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে বড় ধরনের সফল করার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গেলে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চলুন এটিকে (আন্তর্জাতিক সম্মেলন) বড় সফলতা এনে দিই এবং সমস্যাটির সমাধান করি। আশাকরি, এ সম্মেলন থেকে কিছু দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ভবিষ্যতের দিকে একটি সুনির্দিষ্ট পথ থাকা দরকার। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এ বছরের শেষের দিকে জাতিসংঘ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রতি তার সমর্থন জানান।
আমাদের উচিত এই ইস্যুটিকে বিশ্ব দরবারে পুনরায় তুলে ধরা। জাতিসংঘের এই সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটকে নতুনভাবে আলোচনার কেন্দ্রে আনতে পারে- বলেন গ্র্যান্ডি।
তিনি বলেন, এটি রাখাইনে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে আস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে। আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আনন্দিত। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আসন্ন বাংলাদেশ সফর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য নতুন গতি সৃষ্টি করবে।
সাক্ষাতের সময়, তারা বাংলাদেশে অবস্থানরত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও আর্থিক সহায়তা সংগ্রহের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি, তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন, যেখানে একটি প্রধান বিদ্রোহীগোষ্ঠী দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা বলেন, পশ্চিম মিয়ানমারের এই রাজ্যে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য সংঘাত বিরতির প্রয়োজন রয়েছে।
এটি, পরবর্তীতে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তনের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তারা।
আফ্রিকার কিছু মানবিক সংকটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে গ্র্যান্ডি বলেন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সামরিক শাসনের বৈধতার অভাব অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা এবং তাদের আরও টেকসই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রশংসা করেন।
প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি গ্র্যান্ডিকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে সমর্থন দিতে বাংলাদেশের উদ্যোগ এবং রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্টার বিষয়ে অবহিত করেন।
More Stories
হাসিনা পালানোর পর রাসেলস ভাইপারও চলে গেছে : শেখ বশিরউদ্দীন
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যাওয়ার...
ড. ইউনূসের জন্য কেন লাল গালিচা বিছিয়ে দিতে পারে চীন
আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী নেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরে চীন লাল গালিচা বিছিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী ভারতের...
দুদকের অভিযোগকে ‘মিথ্যা’, বললেন টিউলিপ
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁকে ‘নিশানা করে ভিত্তিহীন’ অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন...
ভিসা জটিলতা নিরসনে ইতালির প্রতি ঢাকার আহ্বান
উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশি কর্মীদের ভিসা আবেদন নিষ্পত্তির যথাযথ ব্যবস্থা নিতে এবং বিদ্যমান ভিসা জটিলতা দ্রুত সমাধানে ইতালির দূতাবাসকে অনুরোধ...
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা বাংলাদেশের
গাজা উপত্যকায় পুনরায় ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন শুরু করায় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আজ বুধবার (১৯ মার্চ)...
জুলাই সনদ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে
জুলাই সনদ বাংদেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার যমুনায় মার্কিন সিনেটর গ্যারি পিটার্সের...