ভারতীয় দুটি শিপিং কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নোভাটেকের ‘আর্কটিক এলএনজি-২’ প্রকল্পে জড়িত থাকার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন। গত ৫ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ বৃদ্ধি এবং দেশটি থেকে এলএনজি গ্যাস রপ্তানি ঠেকাতে ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
আজারবাইজানের সংবাদমাধ্যম নিউজ ডট এজেডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ভারতীয় কোম্পানি দুটির নাম হলো- গোটিক শিপিং কোম্পানি ও প্লিও এনার্জি কার্গো শিপিং। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই দুটি কোম্পানির সঙ্গে মার্কিন নাগরিক ও সংস্থাগুলোকে লেনদেন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে এই কোম্পানি দুটির সম্পত্তি জব্দ করার কথাও বলা হয়েছে। তবে কোম্পানি দুটি জাহাজগুলোর ক্রুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে- মার্কিন প্রশাসন গোটিক শিপিং কোম্পানি এবং প্লিও এনার্জি কার্গো শিপিংকে রাশিয়ার নোভাটেকের ‘আর্কটিক এলএনজি-২’ প্রকল্পে জড়িত থাকার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যবস্থাটি রাশিয়া থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি রোধ করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। কারণ রাশিয়ান অর্থনীতির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলো কঠোর করা হচ্ছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওয়াশিংটন ‘আর্কটিক এলএনজি-২’ প্রকল্পের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই বছরের ডিসেম্বরে এলএনজি সরঞ্জাম উৎপাদনে জড়িত বেশ কয়েকটি রুশ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে রপ্তানি চালু রাখার জন্য রাশিয়া যেসব প্রতিষ্ঠানের এলএনজি ট্যাংকার ব্যবহার করছে বলে সন্দেহ করছে ওয়াশিংটন সেগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোও তাদের বন্দর দিয়ে রুশ এলএনজি পরিবহনে বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করছে। এই ব্যবস্থা ২০২৫ সালের বসন্তে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্যাকেজে রাশিয়ার ‘আর্কটিক এলএনজি-২’ এবং ‘মারমানস্ক এলএনজির’—এর মতো রুশ এলএনজি প্রকল্পগুলো প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ, পণ্য সরবরাহ এবং পরিষেবার ওপর নিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ভারতীয় শিপিং কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে তাদের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হতে পারে। বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিবেচনায় নিলে এটি নয়াদিল্লির জন্য নেতিবাচক হয়ে দেখা দিতে পারে।
More Stories
ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশ ঘোষণা করলো যুক্তরাষ্ট্র
ভারতকে ‘অসহযোগী’ দেশের তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক সংস্থা (আইসিই)। এ তালিকায় ভারত ছাড়াও রয়েছে ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান,...
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে কাজ করবে ভারতীয় আমেরিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালাবে ভারতীয় আমেরিকানরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে...
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার প্রথম কাজ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। শুক্রবার...
হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ২১০, কমলা ১১৩
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে কে জয় পেতে যাচ্ছেন, এমন পূর্বাভাসও আসছে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে। অ্যাসোসিয়েটেড...
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস
ফ্লোরিডায় ট্রাম্প এবং ম্যাসাচুসেটসে জয়ী কমালা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর ধীরে ধীরে ফলাফল আসতে শুরু করছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো...