জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন পর্যন্ত তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সুস্পষ্ট গণহত্যা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘এই গণহত্যাকারীদের সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই। এছাড়াও প্রতিশোধ নেবো না বলতে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া হবে না এমনটাই বোঝানো হয়েছিল।’
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রসমাজ এই আন্দোলন শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল। কোলের দেড় মাসের শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বৃদ্ধাও এই আন্দোলনে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। মা তার দেড় মাসের বাচ্চাকে নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন হাজারো মায়ের শিশু যেখানে অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমে এসেছে, আমার আর বড় শিশু নেই থাকলে পাঠিয়ে দিতাম। আমারতো আর বড় সন্তান নেই। তাই কোলের শিশুকে নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা ছিল সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে। মানুষ যা মারা যাবে কোনো অসুবিধা নেই। এজন্য শুধু স্থলভাগেই গুলি ছোড়েনি, আকাশ থেকেও গুলি ছুড়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এমন কিছু এদেশের মানুষকে দেখতে হবে তার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। এসময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের মরদেহ গুম করা হয়েছে। আশুলিয়ার ঘটনা দেখেছেন, সেখানে ভ্যানের ওপর মরদেহের স্তূপ, সেখানে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগুন। আমরা কোন সভ্যতায় বসবাস করছি! এসব ঘটনা যারা ঘটিয়েছে আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাবো তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতেই হবে। এই গণহত্যা ক্ষমা করার অধিকার কারও নেই।’
বিগত সাড়ে ১৫ বছরের কষ্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে আমাদের সঙ্গে যে বৈরী আচরণ করা হয়েছে, আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাদের অফিস কেড়ে নেওয়া হয়েছে, স্বস্তির সঙ্গে আমাদের চলতে দেওয়া হয়নি, দফায় দফায় নির্যাতন করা হয়েছে বিভিন্নভাবে, শেষ পর্যন্ত দিশেহারা সরকার আমাদের নিষিদ্ধ করে তাদের কলিজা ঠান্ডা করেছে। আমরা বলেছি যে আমরা প্রতিশোধ নেবো না। এর মানে হচ্ছে আমরা আইন হাতে তুলে নেবো না। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অপরাধ যিনি করেছেন তার বিরুদ্ধে মামলাও হবে। তাকে শাস্তি পেতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে, আবার সাড়ে ১৫ বছর ধরে যেসব অপরাধ করা হয়েছে তারও বিচার করতে হবে।’
শাপলা চত্বরে যা হয়েছে তা আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা নিজ মুখে স্বীকার করেছেন মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা হুমকি দিতেন বাড়াবাড়ি করলে শাপলা চত্বরের অবস্থা হবে। তারা সেদিন কী করেছিলেন যা দিয়ে হুমকি দিতো! এটিও আরেকটি গণহত্যা ছিল। এই সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে আমাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি। আমরা তবুও তাদের সেই কথা অমান্য করে রাজপথে নেমেছি।’
More Stories
সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার সমর্থন করেন না মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শৃঙ্খলা ফেরাতে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তার মানে প্রশাসন ফেল করছে (ব্যর্থ...
যুক্তরাষ্ট্রে মোদী-ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হচ্ছে না
আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এই অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের...
ফ্যাসিজমের প্রেতাত্মারা বিজয়কে ব্যর্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিজমের অনেক প্রেতাত্মা অবস্থান করছে। তারা এখনো ছাত্র-জনতার বিজয়কে...
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পেলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা সারাদেশে প্রয়োগ করতে পারবেন/ ফাইল ছবি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। ‘দ্য...
অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না: তারেক রহমান
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে লাখো-কোটি জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফসল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি...
বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার বড় সুখবর
নতুন করে প্লান্টেশন খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। ইতোমধ্যে দেশটির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্মী নিয়োগের কোটা অনুমোদন শুরু...