বাংলাদেশে ভয়মুক্ত, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্যসহ উন্নয়ন সহযোগীরা। এর লক্ষ্য হলো স্বচ্ছ গণতন্ত্র। এটি সম্ভব হলে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় থাকবে এবং বিনিয়োগ বাড়বে। আর নির্বাচন নিয়ে বড় সমস্যা হলে যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ নিয়ে হয়ত নতুন করে চিন্তা করবে।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চার্টাডটন ডিকসন এ কথা বলেন।
যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার বলেন, ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাজ্যের বন্ধু বাংলাদেশ। আর স্বল্পোন্নত দেশের উন্নয়নশীল দেশে (এলডিসি) উত্তরণের আগে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন গুরত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে স্বচ্ছ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক, যুক্তরাজ্য এমনটাই চায়। নির্বাচন যাতে ভয়মুক্ত পরিবেশে হতে পারে, তা নিশ্চিত জরুরি।
ডিকসন বলেন, বিনিয়োগকারীরাও এখানে স্বচ্ছ গণতন্ত্র ও নির্বাচন হোক, এমনটা প্রত্যাশা করেন। কেননা এমনটা নিশ্চিত করা গেলে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় থাকে। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিকসন বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে নিয়মতান্ত্রিকতাই প্রমাণ করে, নির্বাচনের বিষয়ে সবাই আন্তরিক। তবে ভালো দক্ষ কমিশন গঠন হলে খুশি হবে যুক্তরাজ্য।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অংশীদাররা বাংলাদেশে বহুপক্ষীয় ও স্বচ্ছ গণতন্ত্রকে সমর্থন করে। ওইসব দেশের বিনিয়োগকারীরা যে দেশে বিনিয়েগ করে, সেখানে আইনের শাসন আছে কি না, দেখতে চায়। আর নির্বাচন সমস্যাপূর্ণ হলে যে ধরনের উত্তরণ প্রত্যাশা করা হচ্ছে, সেটা না-ও হতে পারে। প্রভাবশালী এই কূটনীতিক বলেন, যদি নির্বাচন নিয়ে বড় সমস্যা হয়, তবে যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগের বিষয়ে হয়ত নতুন করে চিন্তা করবে। আর নির্বাচন স্বাধীন, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হলে বাংলাদেশের ওপর আস্থা বেড়ে যাবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন আছে, এটা যেমন ঠিক; তেমনই এ নিয়ে আরও আলাপ-আলোচনার অবকাশ রয়েছে। ১৯৭২ সংবিধান অনুসারে মানবাধিকার রক্ষা স্পষ্ট করা হয়েছিল। এটা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এটা সব দেশের জন্যই চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের আন্তরিকতা থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সব সময়ই উদ্বেগের বিষয়। মানুষের গণতান্ত্রিক চর্চার উন্মুক্ত পরিবেশ দরকার। এটা দিতে হবে।
রোহিঙ্গা বিষয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন জরুরি। কিন্তু এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি দায়িত্ব রয়েছে। শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর পরিবেশ তৈরি না হওয়া হতাশাজনক। এক্ষেত্রে সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্য নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
করোনা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্য বিভিন্নভাবে কাজ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় তহবিল গড়তে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক সামনের পথচলায় পাথেয়। যুক্তরাজ্য উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সব সময়ই অগ্রাধিকার দেয়। প্রকৃত মেধাবীরা যাতে আর্থিক সুবিধাসহ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায়, সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
