আগামীতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সম্ভাব্য আন্দোলন-সংগ্রামকে বিবেচনায় নিয়ে দল গোছাতে শুরু করেছে বিএনপি। সেই লক্ষ্যে আজ বুধবার রাতে গুলশানে দলের চেয়াপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পেশাজীবী নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মতামত শুনেছে বিএনপি।
এর আগে গত সোমবার রাতে ঢাকা বারের আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিএনপি। তারও আগে দুই দফায় দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক, নির্বাহী কমিটির সদস্য, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং জেলার সভাপতিদের সঙ্গে পৃথকভাবে সিরিজ বৈঠক হয়।
আজ সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে শুরু হওয়া মতবিনিময় সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এখানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সম্মিলিত পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের শওকত মাহমুদ ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন-জেডআরএফের অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার ও ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ও অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সালাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আকতার হোসেন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম ও অধ্যাপক ড. নাজমুল মনসুর, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস ও ড. মো. এমতাজ হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের হাসান হাফিজ ও ইলিয়াস খান, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূইয়া ও মো. জাকির হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ঢাকা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও ওমর ফারুক ফারুকি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট মো. হযরত আলী, সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী ফোরামের অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ও গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের রিয়াজুল ইসলাম রিজু ও হাসিন আহমেদ, অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মো. হারুনুর রশিদ হারুন এবং অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মো. রফিকুল ইসলাম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিএ্যাব) সাইফুজ্জামান সান্টু ও সাখাওয়াত হোসেন, ডিপ্লোমা অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জিয়াউল হায়দার পলাশ ও সৈয়দ জাহিদ হোসেন, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মোসাম্মৎ জাহানারা খাতুন ও সাহানারা বেগম, জি-নাইন এর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান ও ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত, জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট রমিজ উদ্দিন ও কামরুল আলম চৌধুরী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম ও এ বি এম রুহুল আমিন আকন্দ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের এম আব্দুল্লাহ ও নূরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের কাদের গণি চৌধুরী ও মো. শহিদুল ইসলাম, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এম-ট্যাবের এ কে এম মূসা লিটন ও মো. বিপ্লবউজ্জামান বিপ্লব প্রমুখ।
বৈঠক সূত্র জানায়, মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ পেশাজীবী নেতা গঠনতন্ত্র মোতাবেক একটি শক্তিশালী ও সম্মিলিত পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ গঠনের দাবি জানান। কোনো ব্যক্তিবিশেষ যেন সংগঠনে একাধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। আগামীদিনে বিএনপির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নিতে হলে পেশাজীবী সংগঠনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর কোনো বিকল্প নেই।
নেতারা বলেন, গত ২০ বছরে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠনকে কোনো রকম নার্সিং বা পুনর্গঠন করা হয়নি। এমনকি পেশাজীবী সংগঠনের কোনো গঠনতন্ত্রও তৈরি হয়নি। তাই পেশাজীবী সংগঠন থেকে আশানুরূপভাবে কোনো ফল পাওয়া যায়নি। যদিও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এই পেশাজীবী সংগঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছিল।
পেশাজীবীরা বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় তৎকালীন সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির প্রায় সব সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করে। বিএনপি তখন ছিল নেতৃত্বশূন্য। যে কারণে সেই দুঃসময়ে রাজপথে ফখরুদ্দিন-মঈন বিরোধী আন্দোলন ফলপ্রসূ হয়নি। তাই অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পেশাজীবী সংগঠনকে আরও শক্তিশালী হিসেবে পুনর্গঠনের দাবি উত্থাপন করা হয়।
নেতারা আরও বলেন, বিএনপিসহ সব অঙ্গ সংগঠন থেকে এক-দুজন করে নেতা পেশাজীবী সংগঠনে রাখা যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা জানান, পেশাজীবী নেতাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ মতামত নেন তারেক রহমান। তিনি সবার বক্তব্য ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং প্রয়োজনীয় বিষয় নোট করেন।
More Stories
দায়িত্ব নেওয়ার সময় নির্বাচন দেওয়ার কোনো শর্ত ছিল না : সাখাওয়াত হোসেন
দেশে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনই বলতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার...
জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে : এনসিপি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক...
আপাতত লন্ডন যাচ্ছেন না খালেদা জিয়া, আসছে না এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনের হাসপাতালে নিতে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার সকাল ৮টায় হযরত...
‘আমি ভালো আর সব খারাপ’— আওয়ামী আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমি ভালো আর সব খারাপ। এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি ১৬ বছর ধরে।...
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল অনুরোধ পূরণ করছে সরকার: প্রেস সচিব
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত তার পরিবারের সকল অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকার পূরণ করছে বলে জানিয়েছেন...
জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলন শুরু রোববার
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে রোবিবার (৭ ডিসেম্বর)।...
