জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন করেছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদসহ এ সরকারের প্রয়াত সকল সদস্য, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ এর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শুনানো হয়। মুজিবনগর সরকারের ওপর একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয় ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে।
এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তিনি মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য এবং কীভাবে অস্থায়ী এই রাজধানী বঙ্গবন্ধুর নামে মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয় সে ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনার পরে ২৬ মার্চ জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও আইনগত ভিত্তি স্থাপনে মুজিবনগর সরকারের কোনো বিকল্প ছিল না।’
মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্ব, কৌশল ও সময়োপযোগী দিক-নির্দেশনার ফলে মুক্তিযুদ্ধ দ্রুততম সময়ে সফল সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায় মর্মে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে বিশ্ব জনমতকে বাংলাদেশের পক্ষে আনা, যা তারা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছিল। এই সরকার বিশ্ব সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের পক্ষে আনতে বেশ কিছু সময়োযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাকিস্তানি দূতাবাসে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকরা যেন দ্রুত পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে মুজিবনগর সরকারের পক্ষে আনুগত্য প্রকাশ করেন, সে উদ্যোগ গ্রহণ করে।’
তিনি নতুন প্রজন্মের মাঝে মুজিবনগর সরকারের ইতিহাস, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরার আহ্বান জানান। প্রবাসী বাংলাদেশিগণ এবং মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারি বাংলাদেশে গমনকালে যেন তাদের সন্তানদের এই ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করান সে মর্মে অনুরোধ জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘জাতির পিতা যে শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নে আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাব এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রতিটি স্তরে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করব, মুজিবনগর দিবসে এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন আলোচকগণ। মুজিবনগর দিবসের এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারি অংশগ্রহণ করেন।
More Stories
বিজয়ের ৫৫ বছরে লস এঞ্জেলেসে কমিউনিটির প্রাপ্তি
- কাজী মশরুল হুদা বিজয়ের ৫৫ বছর হতে চলেছে। প্রায় ২ কোটির মত প্রবাসী বাংলাদেশী বিশ্বজুড়ে বসবাস করছে। যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে...
গণঅভ্যুত্থানের সময় আমিরাতে আটক ২৪ বাংলাদেশি মুক্তি পাচ্ছেন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আটক হওয়া আরও ২৪ বাংলাদেশি নাগরিক মুক্তি পাচ্ছেন। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর)...
থাইল্যান্ডের ই-ভিসা নিয়ে সতর্কবার্তা দূতাবাসের
বাংলাদেশের কয়েকটি এজেন্সি ২-৩ ঘণ্টায় থাই ই-ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। যা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ঢাকাস্থ রয়েল থাই দূতাবাস।...
মামদানির জয়ের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জারা রহিম
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন ৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি। কিন্তু তার এই ঐতিহাসিক বিজয়ের নেপথ্যে ছিলেন...
বাংলাদেশি ও ভারতীয়দের ভিসা গণহারে বাতিলের ক্ষমতা চাইছে কানাডা
কানাডার সরকার বিদেশিদের গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা পাওয়ার চেষ্টা করছে। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভারত ও...
দুই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে প্রত্যর্পণে কাজ করছে মালয়েশিয়া
বেস্টিনেটের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর এবং তার সহযোগী রুহুল আমিন স্বপনের প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ নিয়ে কাজ...
