নারায়ণগঞ্জের মসজিদের ঘটনাটা কেন ঘটল সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘মসজিদের ঘটনাটা কেন ঘটল নিশ্চয়ই সেটা বের হবে।’
আজ রোববার জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে যে ঘটনাটা ঘটেছে, মসজিদে যে বিস্ফোরণ ঘটল এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা সেখানে গেছেন। সেখানে নমুনা সংগ্রহ করছেন। এই ঘটনাটা কেন ঘটল, কীভাবে ঘটল সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে এবং আমি মনে করি, সেটা অবশ্যই বের হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে আমার সঙ্গে কিন্তু সবসময় আমাদের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল মেসেজ পাঠিয়েছে। প্রতিমুহূর্তে সকালে, বিকেলে মেসেজ পাঠাচ্ছে এবং রোগীদের অবস্থা জানাচ্ছে। অনেকে মারা গেছেন। বাকি যারা তাদের পোড়ার অবস্থা এত খারাপ তারপরও চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের সব ধরনের চিকিৎসা আমরা দিচ্ছি। এখন আল্লাহ যদি এদের জীবনটা দিয়ে যান।’
‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে মসজিদে নামাজ পড়া অবস্থায় এ ধরনের একটা বিস্ফোরণ। ওইটুকু একটা জায়গায় ছয়টা এসি লাগানো আবার গ্যাসের লাইনের ওপর নাকি এই মসজিদটি নির্মাণ! সাধারণত যেখানেই গ্যাসের পাইপ লাইন থাকে সেখানে কোনো নির্মাণ কাজ হয় না। আমি জানি না, রাজউক কি এটার পারমিশন দিয়েছে কি-না। এটা পারমিশন তো দিতে পারে না, দেয়া উচিত না,’ যোগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি আরও বলেন, ‘সবসময় একটা খুব আশঙ্কাজনক থাকে। সেটাই এখন তদন্ত করে দেখা হবে। মসজিদে সবাই দান করে, আজকাল তো সকলের পয়সা আছে, এয়ারকন্ডিশন দিয়েছে। সেখানে এই যে বিদ্যুৎ সরবরাহটা, বিদ্যুৎ কতটা নিতে পারবে? সেটার ক্যাপাসিটি ছিল কি-না, সার্কিট ব্রেকার ছিল কি-না-এসব বিষয়গুলো কিন্তু দেখতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে কিছু করতে গেলে তার একটা দুর্ঘটনা অবশ্যই ঘটতে পারে।’
ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছি এর কারণটা খুঁজে বের করার। সারা বাংলাদেশে মসজিদগুলোতে যারা অপরিকল্পিতভাবে, ইচ্ছামতো এয়ারকন্ডিশন লাগাচ্ছেন বা যেখানে সেখানে একটা মসজিদ গড়ে তুলছেন, সে জায়গাটা আ-দৌ একটা স্থাপনা করবার মতো জায়গা কি-না, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেয়া বা সেখানে নকশাগুলো করা হয়েছে কি-না, সেই বিষয়গুলো কিন্তু দেখা একান্ত প্রয়োজন। নইলে এ ধরনের ঘটনা দুর্ঘটনা যেকোনো সময় ঘটতে পারে।’
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে একসঙ্গে ছয়টি এসির বিস্ফোরণের ঘটনায় রোববার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। তারা সবাই রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, বার্ন ইনস্টিটিউটে ১৩ জন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, তাদের সবার অবস্থা সংকটাপন্ন। প্রত্যেকেরই শ্বাসনালি, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গেছে।
শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় তারা কেউ আশঙ্কামুক্ত নন। এদের মধ্যে চারজনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলেও জানান ডা. সামন্ত লাল সেন।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অর্ধ-শতাধিক মুসল্লি আহত হন।
More Stories
২০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু বইমেলা
আগামী বছরের অমর একুশে বইমেলার সময়সূচি নিয়ে জটিলতার অবসান হয়েছে শেষ পর্যন্ত। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতেই হচ্ছে বইমেলা। তবে সাধারণত ১...
আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দেখামাত্র গ্রেপ্তার, না হলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আওয়ামী লীগের যারা সন্ত্রাসী, তাদের বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা...
হাদির অবস্থা সংকটজনক
সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ জুলাইযোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটজনক ও অপরিবর্তিত রয়েছে। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানের প্রতিবেদনে...
নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না: ভারতকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে—এ বিষয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর কোনো উপদেশের প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ভারতকে...
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান প্রেসসচিবের
আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না—এ প্রশ্নে কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।...
‘সেভেন সিস্টার্স’ ভারত থেকে আলাদা করে দেবো: হাসনাত
ভারত বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন বানাতে চায় মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘ভারতকে স্পষ্ট ভাষায়...
