Read Time:5 Minute, 3 Second

কোভিড-১৯ চিকিৎসায় অপরিহার্য বেড, মাস্ক এবং ভেন্টিলেটর সংকট আগে থেকেই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোতে।

ক্রমবর্ধমান রোগীর চাপে এবার আইসিইউ’র (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। রাজ্যে রাজ্যে করোনার সংক্রমণ ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।

হাসপাতালগুলোতে জলোচ্ছ্বাসের মতো আসছে রোগী। অতিরিক্ত রোগী সামলাতে রীতিমতো লড়াই করছে ডাক্তার, চিকিৎসক ও নার্সরা।

সব রোগীকেই সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাছাই করে শুধু গুরুতর রোগীদেরকেই সেবা দেয়া হচ্ছে।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনো কোনো রাজ্যে কিছুটা উন্নতি হলেও গত তিন সপ্তাহে ফের চরম অবনতি হয়েছে। খবর সিএনএন, রয়টার্স ও সিএনবিসির।

লকডাউন শিথিল করায় টেক্সাস, অ্যারিজেনা ও ফ্লোরিডাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। রুদ্ধশ্বাসে ছুটছে সংক্রমণের ঘোড়া।

কোনোভাবেই রাশ টানা যাচ্ছে না। আগেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল, দ্রুত লকডাউন শিথিল করলে এই রাজ্যগুলোতে করোনা ফের ভয়াবহ আকার নিতে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সেই আশঙ্কাই এখন সত্যি হচ্ছে। তিন সপ্তাহ ধরে একটানা টেক্সাস, অ্যারিজোনাসহ অর্ধডজন রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী ভর্তি অব্যাহত রয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, ফ্লোরিডায় অন্তত ৪২টি বড় হাসপাতালে এখন আর কোনো আইসিইউ খালি নেই। বাকি হাসপাতালগুলোতেও দ্রুতই কমে আসছে।

তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এজেন্সি ফর হেলথ কেয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেন দাবি করেছে, রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে সাধারণ বেডগুলোকে দ্রুত আইসিইউতে রূপান্তর করার সক্ষমতা রয়েছে। এবং পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত আইসিইউ’র ব্যবস্থা করা যাবে।

রাজ্যের মিয়ামি শহরের জ্যাকসন মেমোরিয়াল হসপিটালের ট্রমা সেন্টারের পরিচালক ড. নিকোলাস নামিয়াস সিএনএনকে বলেছেন, এই মুহূর্তে আমাদের হাসপাতালে তেমন ভয়াবহ কিছু ঘটতে দেখছি না। তবে প্রতিদিনই আমরা আইসিইউ সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

তিনি জানান, আইসিইউ’র অভাবে কিছু তরুণ করোনা রোগীকেও শুধু ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। অ্যারিজোনায় চলতি সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিনই মৃত্যুর নতুন রেকর্ড নথিভুক্ত করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

সেই সঙ্গে রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীতে আইসিইউগুলো দ্রুত ভরে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে কম সংখ্যক আইসিইউ হাতে রয়েছে বলেও জানিযেছেন কর্মকর্তারা। ফিনিক্স শহরের মেয়র কেইট গ্যালেগো মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের হাসপাতালগুলো কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই সংকট আরও নতুন মাত্রা নিতে যাচ্ছে। জর্জিয়ার হাসপাতালগুলোতেও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

রাজ্যের করোনা বিষয়ক ওয়েবসাইটে জর্জিয়া ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এজেন্সি বলেছে, রাজ্যের হাসপাতালগুলোর পাঁচ ভাগের চার ভাগই আইসিইউ বেডই এখন রোগীতে পূর্ণ। গুরুতর রোগীদের জন্য আর মাত্র ১৮ শতাংশ আইসিইউ খালি রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালগুলোর সংগঠন আমেরিকান হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের (এএইচএ) দেয়া সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) এক লাখেরও কম বেড রয়েছে। যার বেশির ভাগই এখন রোগীতে পূর্ণ।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post করোনায় আক্রান্ত বলিভিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট
Next post যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের নতুন রেকর্ড
Close