Read Time:4 Minute, 47 Second

 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘোরানোর মুহূর্ত’ আখ্যা দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তার দল এবার ‘সংস্কারের পাহারাদার’ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে।

সোমবার রা‌তে বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগের পর দেশে ফিরে আসা ২৪ জনকে স্বাগত জানিয়ে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রবাসে আটক থাকা আন্দোলনকারীদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে অভিহিত করে নাহিদ বলেন, ‘সরকারের উচিত ছিল আরও আগে প্রবাসী জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তির ব্যবস্থা করা। তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি বলেন, এসব মুক্তিপ্রাপ্তদের পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।

তিনি জানান, এনসিপির দাবির প্রেক্ষিতে প্রবাসীদের পোস্টাল ভোটের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, যা দেশের রাজনীতিতে প্রবাসীদের অংশগ্রহণে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। ‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা জরুরি’– বলেন তিনি।

নাহিদের অভিযোগ, দেশে যে সংস্কার কার্যক্রম জুলাই অভ্যুত্থানের পর শুরু হয়েছিল, তা এখন পরিকল্পিতভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। একটি রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে, আরেকটি দল নেপথ্যে সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আসন্ন গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্টদের অনুসারী ছাড়া কেউ জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ‘না’-এর পক্ষে থাকার কথা নয়। কিন্তু একটি শক্তি পুরোনো কাঠামো ধরে রাখতে চাইছে, তারা ‘না’-এর পক্ষে প্রচারণায় নামতে পারে—এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’

নাহিদ বলেন, দেশের বর্তমান নির্বাচনী রাজনীতি মূল লক্ষ্য থেকে সরে গেছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হওয়া উচিত অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, তরুণদের কর্মসংস্থান, গণতন্ত্র চর্চা, সুশাসন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতি গড়ার প্রশ্নে। কিন্তু এখন মুক্তিযুদ্ধ কার্ড আর ধর্মীয় কার্ড—এই দুই বিভাজনমূলক রাজনীতিতেই আটকে রাখা হচ্ছে জাতিকে।’

এনসিপিকে ‘নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, তার দল জনগণের ত্যাগ ও শহিদদের রক্তের প্রতি দায়বদ্ধ। ‘মূল রাজনৈতিক প্রশ্নে আমরা কোনো আপস করব না,’ বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, এবারের নির্বাচন কেবল সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন নয়—এটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের ভোট। ‘জনগণ বুঝে ভোট দেবে। এবার তারা পথ বদলের সিদ্ধান্ত নেবে,’—যোগ করেন এনসিপি আহ্বায়ক।

এনসিপি যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে নিজের কৃতিত্ব দাবি করে—এ অভিযোগও নাহিদ নাকচ করেন। তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলন ছিল জনগণের, শিক্ষার্থীদের। আমরা কেউ একক নই। বিএনপি-জামায়াতসহ অনেকেই এখন সেই গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করছে।’

নাহিদ অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে যুদ্ধাহতদের সহযোগিতা হোক কিংবা প্রবাসে আটক ২৪–২৫ পরিবারের প্রতি সহায়তা—সব দায়ভারই চাপানো হয় এনসিপির ওপর। কিন্তু সাফল্য এলে সবাই ভাগ বসায়। দায় সব আমাদের কাঁধে, কিন্তু কৃতিত্ব ভাগে নেয় সবাই।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মোদির গভীর উদ্বেগ
Next post চোরাগলিতে হাঁটার চেষ্টা করলে আরেকটা ৫ আগস্ট হবে: জামায়াত আমির
Close