Read Time:5 Minute, 11 Second

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং টেলিফোনে কথা বলেছেন। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর ইস্যু প্রাধান্য পায়।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি ও শিনহুয়া জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ও জিনপিংয়ের এটি দ্বিতীয় ফোনালাপ। আলোচনার পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ না হলেও, টিকটক বিক্রি, শুল্কনীতি এবং সম্ভাব্য দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক এর প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমরা টিকটক ও বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করছি। একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।” তিনি আরও জানান, চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক বর্তমানে “খুব ভালো” অবস্থায় রয়েছে।

গত ৫ জুন ট্রাম্প জানান, প্রেসিডেন্ট শি তাকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জবাবে ট্রাম্পও শি জিনপিংকে যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ জানান। তবে এখনো কোনো পক্ষ থেকে সফরের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়নি। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, শুক্রবারের ফোনালাপে শি জিনপিং আবারও ট্রাম্পকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

টিকটকের মালিকানা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয় ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে। তার দ্বিতীয় মেয়াদে এটি যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের একটি প্রধান আলোচ্য ইস্যুতে পরিণত হয়। সম্প্রতি স্পেনের মাদ্রিদে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও চীনের বাণিজ্য উপমন্ত্রী লি চেংগ্যাংয়ের মধ্যে বৈঠকে টিকটকের মালিকানা হস্তান্তরের একটি প্রাথমিক কাঠামোতে একমত হওয়া যায়।

প্রস্তাব অনুযায়ী, মার্কিন বিনিয়োগকারীরা টিকটকের অন্তত ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনবে, বাকি ২০ শতাংশ থাকবে চীনা বিনিয়োগকারীদের হাতে। মার্কিন কোম্পানি ওরাকল, আন্দ্রেসেন হোরোভিটজ, সিলভার লেকসহ বেশ কয়েকটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এই বিনিয়োগে অংশ নেবে।

নতুন গঠিত কনসোর্টিয়ামের বোর্ডেও যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে এবং ট্রাম্প প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি এতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। ২০২৪ সালের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে পাশ হওয়া এক দ্বিদলীয় আইনে বলা হয়, টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম চালাতে হলে এর কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মালিকানা মার্কিন হাতে থাকতে হবে।

চীনের পক্ষ থেকে শুরুতে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হলেও, সাম্প্রতিক বাণিজ্য চাপ ও উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তারা কিছুটা নমনীয় হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, এই চুক্তি ভবিষ্যতে ট্রাম্প-জিনপিং বৈঠকের পথ তৈরি করবে। ধারণা করা হচ্ছে, অক্টোবরের শেষদিকে ট্রাম্প এশিয়া সফরে গেলে দুই নেতার মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।

তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত চুক্তির শর্তাবলি এখনও প্রকাশ করা হয়নি এবং প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি ছাড়া অন্য সব তথ্যকে অনুমান হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রশমনে শুল্কনীতি নিয়েও একটি সমঝোতার চেষ্টা চলছে। বছরের শুরুতে দুই দেশ একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্কহার বাড়িয়ে দেয়, যার প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক বাণিজ্যেও।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post অপপ্রচার চালাতে ‘ভুয়া’ পরিচয়পত্র ব্যবহার করছে বাংলাদেশ: টিউলিপের অভিযোগ
Next post বিপ্লবী সংগঠন না থাকলে বিপ্লব হয় না : মির্জা ফখরুল
Close