Read Time:7 Minute, 35 Second

 

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়েছে।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

ঘোষিত ফল অনুযায়ী সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হয়েছেন শিবির-সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের মাজহারুল ইসলাম।

এ ছাড়া নির্বাচনে এজিএস (ছাত্র) পদে ফেরদৌস আল হাসান ও এজিএস (ছাত্রী) পদে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা নির্বাচিত হয়েছেন। তারা দুজনই ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী।

অন্য পদগুলোতে নির্বাচিতরা হলেন শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আবু ওবায়দা ওসামা (শিবির প্যানেল), পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. শাফায়েত মীর (শিবির প্যানেল), সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম (শিবির প্যানেল), সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহিবুল্লাহ শেখ জিসান (স্বতন্ত্র), সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. রায়হান উদ্দীন (শিবির প্যানেল), নাট্য সম্পাদক মো. রুহুল ইসলাম (শিবির প্যানেল), ক্রীড়া সম্পাদক-মাহমুদুল হাসান কিরন (স্বতন্ত্র), সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (নারী) ফারহানা আক্তার লুবনা (শিবির প্যানেল), সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ) মো. মাহাদী হাসান (শিবির প্যানেল), তথ্য প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম লিখন (শিবির প্যানেল), সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আহসাব লাবিব (গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-বাগছাস), সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (নারী) নিগার সুলতানা (শিবির প্যানেল), সহ-সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক (পুরুষ) মো. তৌহিদ হাসান (শিবির প্যানেল), স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক হুসনী মোবারক (শিবির প্যানেল) এবং পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক মো. তানভীর রহমান (শিবির প্যানেল)।

এছাড়া কার্যকরী সদস্য (নারী) পদে জয়ীরা হলেন নাবিলা বিনতে হারুন, ফাবলিহা জাহান, নুসরাত জাহান ইমা। পুরুষ পদে তিনজন হলেন মো. তরিকুল ইসলাম, আবু তালহা, মো. আলী চিশতী নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী সদস্যরা সবাই শিবির সমর্থিত প্যানেলের। বিজয়ী সদস্যদের মধ্যে মো. আলী চিশতী বাগছাস সমর্থিত প্যানেলের। বাকি ৫ জন শিবির সমর্থিত প্যানেলের।

জাকসু নির্বাচনে ২১ হলে নির্বাচিত হলেন যারা
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। পরে হলের কেন্দ্রগুলো থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে আনা হয় এবং রাত ১০টার কিছু পর শুরু হয় ভোট গণনা। এরপর শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত টানা ভোট গণনার পরে নির্বাচন কমিশন গণনা বন্ধ করে জরুরি বৈঠক ডাকে।

এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পুনরায় ভোট গণনা শুরু করে। এ সময় নির্বাচন কমিশন থেকে শুক্রবার রাতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়। তবে দুই দফায় আবার সময় বাড়িয়ে আজকে সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে।

জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন এবং ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন। ভোট পড়েছে ৮ হাজার ৩টি। এটি মোট ভোটের প্রায় ৬৮ শতাংশ।

জাকসুর ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন,  যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন লড়ছেন। এছাড়া হল সংসদের লড়ছেন ৪৪৫ প্রার্থী।

ছাত্রদের হল ও ভোটার সংখ্যা– আল বেরুনী হল: ২১০ জন, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল: ৩৩৩ জন, মীর মশাররফ হোসেন হল: ৪৬৪ জন, শহীদ সালাম-বরকত হল: ২৯৮ জন, মওলানা ভাসানী হল: ৫১৪ জন, ১০ নম্বর ছাত্র হল: ৫২২ জন, শহীদ রফিক-জব্বার হল: ৬৫০ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল: ৩৫০ জন, ২১ নম্বর ছাত্র হল: ৭৩৫ জন, জাতীয় কবি নজরুল হল: ৯৯২ জন এবং তাজউদ্দীন আহমদ হল: ৯৪৭ জন।

ছাত্রীদের হল ও ভোটার সংখ্যা– নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল: ২৭৯ জন, জাহানারা ইমাম হল: ৩৬৭ জন, প্রীতিলতা হল: ৩৯৬ জন, বেগম খালেদা জিয়া হল: ৪০৩ জন, সুফিয়া কামাল হল: ৪৫৬ জন, ১৩ নম্বর ছাত্রী হল: ৫১৯ জন, ১৫ নম্বর ছাত্রী হল: ৫৭১ জন, রোকেয়া হল: ৯৫৬ জন, ফজিলাতুন্নেছা হল: ৭৯৮ জন এবং তারামন বিবি হল: ৯৮৩ জন।

জাকসুর ২৫টি পদের বিপরীতে এবার ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদের মধ্যে- সহ সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া মোট প্যানেল ছিল ৮টি। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে-বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত। ছাত্রদের ১১টি ও ছাত্রীদের ১০টি হলে ভোটগ্রহণ হয়, সব মিলিয়ে ২১টি ভোট কেন্দ্র এবং ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছিল।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে: আলী রীয়াজ
Next post পিছু হটার সুযোগ নেই, জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা
Close