Read Time:4 Minute, 29 Second

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমা চেয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর সাক্ষীর ডায়াসে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে গণহত্যার শিকার প্রত্যেক পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চান তিনি।

হাবিব-মনিরের নেতৃত্বে পুলিশে গড়ে ওঠে ২ গ্রুপ, জবানবন্দিতে মামুন
‘জিন’ হারুনের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের গভীর সম্পর্ক ছিল
বিজ্ঞাপন

মামুনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান।

জবানবন্দিতে আইজিপি মামুন বলেন, আমি ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ‘ট্রিকি’ চাকরি। সবসময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। কিন্তু চাকরি জীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। তবে চাকরি জীবনের শেষ পর্যায়ে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বে থাকতে সংঘটিত হয়েছে। এর দায় আমি স্বীকার করছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়।

তিনি বলেন, গণহত্যার স্বীকার প্রত্যেক পরিবার, আহত ব্যক্তিবর্গ, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করবেন। এ সময় তিনি আবেগপ্রবণ ও অশ্রুসজল হয়ে পড়েন।

সাবেক এই আইজিপি বলেন, আমার এই সত্য ও পূর্ণ বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন বাকি জীবনটা কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।

রাজসাক্ষী আরও বলেন, বৈষম্যরিবোধী আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সরকারের আদেশে ছাত্র-জনতার ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে আহত-নিহত করায় পুলিশপ্রধান হিসেবে আমি লজ্জিত-অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছে এজন্য অপরাধবোধ ও বিবেকের তাড়নায় আমি রাজসাক্ষী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, মঈনুল করিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।

এদিকে ১১তম দিনের মতো আজ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে জেরার জন্য আগামীকাল বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আইজিপি মামুনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ভারতবর্ষ থেকে গুজব ছড়াচ্ছে : ফখরুল
Next post নির্বাচন আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে: সাকি
Close