কোনোরকম আইনানুগ প্রক্রিয়া ছাড়াই হাজারো বাংলাভাষী মুসলমানকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দিচ্ছে ভারত। আটক অবস্থায় তাদের অনেকের ওপর নিপীড়নও চালানো হচ্ছে। অথচ, বাংলাদেশে পুশইন করা এই মুসলমানদের অনেকেই ভারতীয় নাগরিক। গত কয়েক মাস ধরে এমন বিভিন্ন প্রতিবেদন সামনে আসার পর এবার ভারত সরকারকে রীতিমত ধুয়ে দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (মিম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।
রোববার (২৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাভাষী মুসলমান নাগরিকদের বেআইনিভাবে আটক ও পুশ ব্যাকের ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু ও দরিদ্র শ্রেণির উপর পরিকল্পিতভাবে নিপীড়ন চালাচ্ছে।
শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্টে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, এ সরকার শক্তের কাছে দুর্বল, আর দুর্বলের কাছে শক্ত। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে বেআইনিভাবে আটক করা হচ্ছে। অথচ এদের অধিকাংশই ভারতীয় নাগরিক।
আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, নির্যাতনের শিকার এই লোকেরা অধিকাংশই নির্মাণকর্মী, সাফাইকর্মী, রাস্তায় আবর্জনা তোলার সঙ্গে যুক্ত। এরা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। এদের অনেকের পক্ষে পুলিশের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলা বা আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। সেই দুর্বলতাকেই ব্যবহার করছে প্রশাসন।
ওয়াইসি তার বক্তব্যে গুরুগ্রামের জেলা শাসকের এক নির্দেশিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে এসওপি অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গ টেনে ওয়াইসি বলেন, কেবলমাত্র কেউ বাংলা ভাষায় কথা বলেন বলেই তাকে গ্রেপ্তার করা যায় না। ভাষাভিত্তিক গ্রেপ্তার একেবারেই বেআইনি।
এ অভিযোগের পটভূমিতে সম্প্রতি পুনে পুলিশের অভিযানকেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বুধওয়ার পেঠ এলাকার একটি রেড-লাইট জোন থেকে পাঁচ বাংলাভাষী নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের অভিযোগ, ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন ওই নারীরা। পরে পতিতাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।
পুলিশের আরও দাবি, এই নারীরা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করেই দেশে ঢুকেছিলেন। একটি মানবপাচার চক্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল। এ ঘটনায় একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে।
ওয়াইসি অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনার সুযোগ নিয়ে কীভাবে হাজার হাজার বাংলাভাষী মুসলিম নাগরিককে ‘অবৈধ’ বলে চিহ্নিত করা যায়? তার বক্তব্য, ভারত সরকারের এ পদক্ষেপ এক প্রকারের ‘ব্যাকডোর এনআরসি’। তার দাবি, এটি একটি নৈতিক লঙ্ঘন। বন্দুকের মুখে কাউকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া যায় না।
More Stories
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মোদির গভীর উদ্বেগ
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র...
অজিত দোভালকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। সাক্ষাতে অজিত দোভালকে...
বাংলাদেশে বিজনেস ভিসা দেওয়া শুরু হয়েছে: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশের জন্য ব্যবসায়িক ভিসা ইস্যুর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর...
খাগড়াছড়ির অশান্তির পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার ভারতের
চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চল খাগড়াছড়ি বেশ কয়েকদিন অশান্ত ছিল। গত সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেনেন্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, খাগড়াছড়িকে...
ভিসা জটিলতা অতি শিগগিরই সমাধান হবে: প্রনয় কুমার ভার্মা
পরিস্থিতির উন্নতি হলে খুব শিগগিরই ভিসা জটিলতার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রনয় কুমার ভার্মা।...
মোদিকে তীব্র আক্রমণ ওয়াইসির, ‘আপনার ঢাকার বোন দিল্লিতে বসে আছে’
ভারতের বিহারে আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের’ উপস্থিতি। বিজেপির শীর্ষ নেতারা, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী...
