Read Time:7 Minute, 35 Second

শামসুল আরিফীন বাবলু, প্রবাস ডেস্ক, লস এঞ্জেলেস:

যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে উঠা বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা ও আরও ভালোভাবে ফলাফলে উৎসাহিত করে তুলতে, দেওয়া হয়েছে বিশেষ সম্বর্ধনা। অনুশীলন, কঠোর অধ্যবসায় ও কৃতিত্বের স্বীকৃতি দিতে প্রতিবছর ‘জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব ক‍্যালিফোর্নিয়া’ এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। বরাবরের মতো এবারও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষক।

লস এঞ্জেলেসের অদূরে বারব‍্যাংকে চার্চ অব সাইন্টোলজীর বিশাল অডিটোরিয়ামে রবিবার (১৩ই জুলাই) সন্ধ্যা ৭টায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আহমেদের ঘোষণায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। অনুষ্ঠানের সভাপতি আবুল মুনিম সকলকে স্বাগত জানিয়ে প্রথমেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করার জন্য আহ্বান করেন শিশু ‘ফাতিমা মুনিম’কে। ছোট্ট শিশুর সুললিত কণ্ঠে ইংরেজিতে অনুবাদসহ তেলাওয়াতের পরেই আমেরিকা ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর ট্র‍্যাকে বাজানো হয়। এরপর নাতিদীর্ঘ স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি আব্দুল মুনিম। এরপর এওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ড.তানিম আহমেদের শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদানের পর কেবিনেট সদস্যবৃন্দকে স্টেজে ডেকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিশেষ অতিথি বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন, ক‍্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি বেকার্সফিল্ডের যোগাযোগ বিভাগের চেয়ারপারসন ড. আবু নাসের, মেরাজ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুহাম্মদ নাজ, ড.মিজান রহমান সহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের অর্জন যেমন শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, তেমনি সেটা তার পরিবারের এবং পুরো বাংলাদেশী কমিউনিটির।

সম্বর্ধনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ ড.আবু নাসের, মুহাম্মদ নাজ এবং ড.মিজান রহমানের মাধ্যমে এলিম‍েন্টারি, মিডিলস্কুল, হাইস্কুল, ব‍্যাচেলরস, মাস্টার্স এবং ডক্টরেট ডিগ্রীতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ মোট ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। এতে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ সাবেক এবং বর্তমান অন‍্যান‍্য নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দও অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও কেবিনেটের সিনিয়র সহসভাপতি নাসির সৈয়দ জেবুল, সহসভাপতি মুশফিকুর চৌধুরী, কার্যকরী সদস্য ও সাবেক সভাপতি আবুল হাসনাত রায়হান, কার্যকরি সদস্য ও সাবেক সভাপতি মাতাব আহমেদ, কার্যকরী সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম মাসুদ, একমাত্র মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া সুবহান, যুগ্ম সম্পাদক শামসুল আরিফীন বাবলু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসাইন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল আলম, উপদেষ্টা ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন নায়লা রহমান, তাহমিদ মতিন, ফয়েজ মাশরাফি এবং রাওয়াদ হাসান।

এবার পর্যায়ক্রমে সম্মানিত উপদেষ্টা মন্ডলী, চ‍্যারিটি কমিটি, স্পন্সরবৃন্দ এবং তিনজন বিশেষ অতিথিদের মঞ্চে নিয়ে পরিচিতি ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এরপর সভাপতি জনাব মুনিম অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ, অতিথিবৃন্দ এবং সাংবাদিক বৃন্দসহ চার্চ অব সাইন্টোলজীর কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে নতুন প্রজন্মের সামিয়া রহমান দেশীয় জনপ্রিয় কয়েকটি গানের তালে নৃত্যে নৃত্যে দর্শকদের মন কেড়ে নেন এবং পরে দিলওয়ার চৌধুরীর সিলেটের আঞ্চলিক গানে গানে নৈশভোজ পরিবেশন করা হয়।

বিশ্বায়নের যুগে প্রযুক্তির কৌশলের কাছে হার নামানা এক সংগঠনের নাম ‘জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন’। চা আর অলি-আউলিয়ার পূণ্যভুমি বৃহত্তর সিলেটের এই সংগঠন দেশের বাইরে বিশ্বের সর্বাধিক দেশে নির্মোহভাবে তাদের ভাষা, গান, নৃত্য ইত্যাদির মাধ্যমে সংস্কৃতিকে লালন করা, অন‍্য জাতির কাছে তুলে ধরা, এমনকি ইন্টারনেটের সংক্রমণে আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে আতিথেয়তা, পরিবার এবং আত্মীয়তার বন্ধনকে আরো নিবিড় করে ধারণ করতে ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশন’ এজাতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রতি বছর উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বের সম্মাননা অনুষ্ঠান নতুন প্রজন্মের কাছে প্রচন্ড প্রতিযোগিতার জন্ম দিয়েছে বলে মনে করেন কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাঁরা মনে করেন কমিউনিটির অন‍্যান‍্য সংগঠনগুলোও নতুন প্রজন্মকে নিয়ে এজাতীয় উৎসাহমুলক প্রগ্রাম করা উচিত। তাতে শিক্ষার্থীরা যেমন উৎসাহিত হবে তেমনি বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সম্মানও বাড়বে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post এনসিপিকে যে ‘পরামর্শ’ দিলেন সালাহউদ্দিন
Next post এই সরকার একটি দলকে কোলে আরেকটিকে কাঁধে রেখেছে: মির্জা আব্বাস
Close