Read Time:4 Minute, 54 Second

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যেসব দেশ আগামী পাঁচদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে না, তাদের ওপর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

গত ৯ এপ্রিল ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে তিন মাস সময় দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘পারস্পরিক’ শুল্কচুক্তি করার জন্য। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। ট্রাম্প বলেছেন, প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি দেশকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হবে তাদের নতুন শুল্কহার, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

ট্রাম্প বলেন, শুল্কহার ৬০ বা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে ১০ বা ২০ শতাংশও হতে পারে। এই চিঠিগুলো আগামীকাল (৫ জুলাই) থেকেই পাঠানো শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চূড়ান্ত রূপ দিয়েছি। চিঠিতে বলা থাকবে কোন দেশকে কত শুল্ক দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে।

গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্প বেশিরভাগ বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ‘পারস্পরিক শুল্ক’ চাপিয়ে দেন। এবার সেই হার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই ঘোষণার ফলে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে এবং মার্কিন ডলার ও বন্ডের দরপতন হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টক ও বন্ড বাজার বন্ধ থাকলেও বিশ্বজুড়ে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

কোন দেশগুলোকে এই চিঠি পাঠানো হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানকে বারবার ‘অতিরিক্ত সুবিধাভোগী’ বলে সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। এমনকি তিনি জাপানের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। যদিও অনেকের ধারণা, এটি হতে পারে একটি কৌশলগত চাপ।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, কিছু দেশের জন্য সময়সীমা নমনীয় হতে পারে যদি তারা সদিচ্ছার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায়। ভারতের ক্ষেত্রে এখনো আলোচনা চলমান থাকায় সময়সীমা বাধ্যতামূলক নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তবে ট্রাম্প শুক্রবার বলেছেন, ‘না, খুব একটা ছাড় দেওয়া হবে না।’ তিনি জানান, প্রায় সব ক্ষেত্রেই ১ আগস্ট থেকে শুল্ক আদায় শুরু হবে।

কয়টি চুক্তি হয়েছে?
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ চুক্তি নয়, বরং আলোচনার রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে মাত্র দুটি দেশের—যুক্তরাজ্য ও চীনের সঙ্গে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভিয়েতনামের সঙ্গেও একটি চুক্তি হয়েছে, তবে সেই চুক্তির বিস্তারিত বা স্বাক্ষর এখনো প্রকাশ পায়নি।

এপ্রিলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘আমি ২০০টি চুক্তি করেছি।’ কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেন, শত শত চুক্তি একসঙ্গে সম্ভব নয়, বরং অনেক দেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজেই শুল্কহার নির্ধারণ করে দেবে।

ট্রাম্প বলেন, আমরা যদি ২০০টি দেশকে নিয়ে চুক্তি করতে যাই, সেটা সম্ভব নয়। তাই আমরা নিজেরাই বলবো, যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করতে হলে তোমাদের এই পরিমাণ শুল্ক দিতে হবে।

এই সিদ্ধান্তকে ‘সহজ সমাধান’ হিসেবে দেখছেন ট্রাম্প। কারণ তার ভাষায়, ১৭০টিরও বেশি দেশ আছে, আর কতগুলো চুক্তি করা সম্ভব?

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে রাস্তায় নেমেছি: নাহিদ ইসলাম
Next post যাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে তারাই সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন চায়: সালাহউদ্দিন
Close