Read Time:6 Minute, 15 Second

ভারত থেকে বাস্তবিক অর্থে ‘পুশইন’ ঠেকানো সম্ভব নয়। আজ বা আগামীকাল আবার চিঠি দেবে বাংলাদেশ। দুই দেশের বিদ্যমান কনস্যুলার সংলাপ ব্যবহার করে বিষয়গুলোকে নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা যায় কি না, সে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

ভারত থেকে ‘পুশইন’ নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত থেকে ‘পুশইন’ হচ্ছে। সেটি ফিজিক্যালি ঠেকানো সম্ভব নয়। এটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিঠি আদান–প্রদান হচ্ছে। আমরা বলছি এটি যাতে পদ্ধতি অনুযায়ী হয়।

তিনি বলেন, তারা কিছুক্ষেত্রে বলেছে- অনেক কেস আটকে রয়েছে, সেগুলো ঠিকমতো বাংলাদেশ করছে না। যাচাই করে দেখেছি খুব দীর্ঘদিনের তালিকা রয়েছে। পাশাপাশি এটাও দেখেছি যে ভারতের তালিকা অনুযায়ী যাচাই করে অনেককে ফেরত নেওয়া হয়েছে। কাজেই দুপক্ষের বক্তব্য থাকতে পারে।

তিনি বলেন, কনস্যুলার সংলাপ ব্যবহার করে বিষয়গুলোকে নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি কি না– আমরা সে চেষ্টা করছি। নিয়মিত পদ্ধতিতে যাতে হয়, তার জন্য বাংলাদেশ আরেকটি চিঠি দেবে ভারতকে। তারা যে তালিকা দিয়েছে, তা যাচাই করে যাদের বাংলাদেশি পেয়েছি, তাদের ফেরত নিয়েছি।

প্রতিবাদপত্র নাকি কূটনৈতিকপত্র পাঠানো হবে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা একটি বস্তুনিষ্ঠ চিঠি পাঠাবো। যেটাতে পদ্ধতির কথা উল্লেখ করবো। কনস্যুলার সংলাপ ব্যবহারের চেষ্টা করবো। অনেক দিন এ সংলাপ হয়নি।

ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে পাঠানো চিঠি নিয়ে ভারত থেকে ফিরতি কিছু আসেনি।

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে দ্বিতীয় পত্র দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও দ্বিতীয় পত্র দেওয়া হয়নি। তবে প্রয়োজন হলে অবশ্যই দেওয়া হবে।

সীমান্তে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ক্ষেত্রে বাংলাদেশি কি নমনীয় হয়ে গেছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন- এ বিষয়ে নমনীয়তা দেখানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করছি এবং এ প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। অবশ্যই সীমান্ত হত্যা নিয়ে খুব শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ করবো। সীমান্ত হত্যাকে কখনই মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তে নেই।

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পাল্টা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশের নির্ভরতা ভারতের ওপর কমে গেছে। এতে করে রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়ছে না। এখন দিল্লির পরিবর্তে সিলেট থেকে পণ্যবাহী ফ্লাইট যাচ্ছে এবং কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। এখন স্পেনে সরাসরি পণ্যবাহী ফ্লাইট যাচ্ছে।

পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, আমরাও আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ভারতের সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছি। তারা তাদের প্রয়োজনে ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করেছে কি না, আমি তা জানি না।

উন্নয়ন অংশীদাররা নির্বাচন নিয়ে কি জানতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যারা দেখা করেন বা বিদেশে যখন কোনো আলোচনা হয়, তখন নির্বাচনের বিষয়ে অনেকেই জানতে চান। আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করা নিয়ে আমরা সরকারের অবস্থান জানিয়ে দেই।

সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ বা কমিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তৌহিদ হোসেন বলেন, যে সিদ্ধান্তগুলো আমাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়, তার অনেকখানির জন্য আমরা দায়ী। আমরা, আমাদের দেশের মানুষ, আমাদের ব্যবসায়ীরা দায়ী। বিশেষ করে যারা শ্রমশক্তি রপ্তানি করেন। মালয়েশিয়ায় তো বাংলাদেশের প্রতি কোনো বিরূপ মনোভাব নেই। আমাদের ঘর সামলাতে হবে এক্ষেত্রে। অনেকের আমার কথা পছন্দ হবে না। একটি ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কিছু করার রয়েছে।

বাংলাদেশিদের এভাবে যাওয়া তো নতুন নয়– এ নিয়ে তিনি বলেন, একটা অনিয়ম আপনি করতেই থাকবেন, তারা বিভিন্ন সময় আমাদের বলেছে যে এ বিষয়টি থামানোর যাতে ব্যবস্থা নেই। এটি থামাতে আমরা যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছি না বলে আমার নিজেরই ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, তাদেরও তো মনে হতেই পারে। আমাদের আরও পদক্ষেপ নিতে হবে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ‘জুলাই সনদের’ আগে নির্বাচন চায় না এনসিপি
Next post সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০ করার পক্ষে বিএনপি
Close