Read Time:4 Minute, 54 Second

নারায়ণগঞ্জ আদালতের এজলাসে প্রবেশমুখে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সোমবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত হাফেজ মো. সোলাইমান (১৯) হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য এদিন তাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হয়েছিল।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানান, এই হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে বিএনপন্থি আইনজীবীরা আনিসুল হকের ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে কিল-ঘুষি দেন তারা। এ সময় আনিসুল হকের মাথায় হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সঙ্গে প্রিজন ভ্যানে তোলেন। সংবাদকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতে এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে কিল-ঘুষি মারতে দেখা যায়। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আদালত পুলিশ হামলাকারীদের বাধা না দিয়ে বরং আনিসুল হককে নিয়ে দৌড়াতে থাকেন। দ্রুত দৌড়ে তাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে দেন।

প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন একদল আইনজীবী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুনানির আগে ও পরে বিএনপির মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির এবং আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান।

আনিসুল হকের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, ‘এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চর-থাপ্পর দিয়েছে- এমনটা আমার নজরে পড়েনি।’

তবে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির বলেন, ‘আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে। এতে বিএনপন্থি আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুরের মিরাজ উদ্দিনের ছেলে সোলাইমান গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট সোলাইমানের ভগ্নিপতি শামীম কবির বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ ও নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৫১ জনকে মামলায় আসামি করা হয়। এছাড়া, মামলায় রয়েছে অজ্ঞাত আসামি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post আওয়ামী লীগের শুধু দাফন হয়নি, কবর রচনা হয়ে গেছে: খোকন
Next post পরিষ্কার করে বলেন নির্বাচন কবে হবে : মির্জা ফখরুল
Close