Read Time:4 Minute, 45 Second

পাকিস্তানের কাশ্মিরের প্রধান নদীতে হঠাৎ করে বেড়েছে পানির প্রবাহ। এতে করে সেখানে মাঝারি বন্যা দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফ্ফরাবাদের বিভাগীয় প্রশাসন শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারত ঝিলাম নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছাড়ছে। এতে করে সেখানে হঠাৎ করে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিবৃতিতে মুজাফ্ফরাবাদ প্রশাসনের মুখপাত্র বলেছেন, “ঝিলাম নদীতে ভারত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি ছাড়ায় মাঝারি বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।”

পাক সংবাদমাধ্যম দুনিয়া নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে অবহিত না করেই নদীর পানি বেশি পরিমাণে ছাড়ছে ভারত। এরপর হু হু করে ঝিলাম নদীর পানি বেড়ে যায়। বন্যার বিষয়ে সতর্ক করতে মসজিদ থেকে স্থানীয়দের মাইকিং করতে শোনা গেছে। এতে করে নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এই পানি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ থেকে পাকিস্তানের চাকোঠি দিয়ে প্রবেশ করছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে থাকা সিন্ধু নদের একটি উপনদী হলো ঝিলাম। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সিন্ধু নদের পানি চুক্ত স্থগিত করেছে নয়াদিল্লি। দেশটি হুমকি দিয়েছে পাকিস্তানকে সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও দেওয়া হবে না। অপরদিকে পাকিস্তান বলেছে, সিন্ধুর প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা করা হলে এটিকে তারা যুদ্ধের কর্মকান্ড হিসেবে বিবেচনা করবে। আর সেই অনুযায়ী (সামরিক) ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমন উত্তেজনার মধ্যে সিন্ধু নদের পানি নিয়ে ভারতকে হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেছেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে।

গতকাল শুক্রবার ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল জানান, পাকিস্তানে ভারত থেকে নদীর এক ফোঁটা পানিও যেন না যায় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা। তার এমন ঘোষণার পর শনিবার এক জনসভায় এমন হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তান সরকারে থাকা বিলওয়াল ভুট্টো। তিনি বলেন, “সিন্ধু আমাদের আছে, সিন্ধু আমাদের থাকবে— হয় এটি দিয়ে আমাদের পানির স্রোত বইবে নয়তো তাদের (ভারতীয়) রক্ত বইবে।”

গত মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদ পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। যদিও এ মুহূর্তে সিন্ধু নদের পানি প্রবাহ আটকানোর মতো অবকাঠামো ভারতের নেই। তবে পানির প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জলশক্তিমন্ত্রী।

তিনি এক্সে লেখেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে একটি রোপম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। বৈঠকে তিনটি অপশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সরকার স্বল্পকালীন, মধ্যকালীন এবং দীর্ঘকালীন ব্যবস্থার ওপর কাজ করছে যেন পাকিস্তানে এক ফোঁটা পানিও না যায়। শিগগিরই নদীর প্রবাহ বন্ধ করতে ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন হবে এবং প্রবাহ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।”

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post চীন সব সময় শক্তিশালী বাংলাদেশ দেখতে চায় : মির্জা ফখরুল
Next post সুবিধামতো সময় যে কোনো দলে যোগ দিতে পারি: উপদেষ্টা আসিফ
Close