Read Time:6 Minute, 49 Second

চীন সব সময় একটা শক্তিশালী বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশে সার্বিক একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে ঢাকা সফররত চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়ে রাত সোয়া ৭টার দিকে শেষ হয়।

বৈঠক প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা ছিল একটা পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে আরেকটি পলিটিক্যাল পার্টির মির্টিং। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক পুরনো। কিন্তু ফ্যাসিস্টের আমলে ১৫ বছর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা সম্ভব হয়নি। কারণ, ফ্যাসিস্ট সরকার সেটা অ্যালাউ করেনি। এখন সেই সম্পর্ক আবার রিভাইভ করেছি। ফলে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখন আবার গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। আমাদের দুই পার্টির সম্পর্ক বাড়ছে, ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কী ধরনের আলোচনা হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বা চীন, তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে তারা জেনেছে যে বাংলাদেশের নির্বাচনের পরিস্থিতি কী, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কী? আমরা সে ব্যাপারে তাদের ব্রিফ করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, চীন সব সময় বাংলাদেশে একটা স্থিতিশীলতা চায়। একটা শক্তিশালী বাংলাদেশ দেখতে চায়, সমৃদ্ধ জনগণ দেখতে চায় এবং বাংলাদেশে সার্বিক একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে চায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেছি। দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কীভাবে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইট ইজ গুড ডিসকাশন, গুড মিটিং। সার্বিকভাবে সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানান তিনি।

বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাত সদস্যদের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলের অন্যরা হলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার

অন্যদিকে বৈঠকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের (আইডিসিপিসি) দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর পেং জিউবিনের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

প্রতিনিধি দলে থাকা অন্যরা হলেন আইডিসিপিসির দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর উপপরিচালক চেন জুয়ানবো, দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর তৃতীয় সচিব চেন ইয়াংপেই, আইডিসিপিসির ব্যুরো ফর দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশীয় অ্যাফেয়ার্সের ঝাং গুইউ, ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ঢাকায় চীনা দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের পরিচালক ঝাং জিং এবং ঢাকায় চীনা দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগে সংযুক্ত লিউ হংরু।

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান, চিন্তাভাবনা কী, বৈঠকে সেটা আমরা দলটির মহাসচিবের কাছ থেকে অবহিত হয়েছি। এটা (নির্বাচন) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। বাংলাদেশের জনগণই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বৈঠক শেষে সফররত চীনা প্রতিনিধি দলের সম্মানে মির্জা ফখরুল ইসলাম এক নৈশভোজের আয়োজন করেন। এর আগে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে সাতটি রাজনৈতিক দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দেশটি সফর করে।

এদিকে বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের আগে ওয়েস্টিন হোটেলে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর পেং জিউবিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ভারতে ৫৫০ অবৈধ ‘বাংলাদেশি’ আটকের দাবি
Next post হঠাৎ পানি ছেড়ে দিয়েছে ভারত, পাকিস্তানের কাশ্মিরে বন্যা
Close