ভারতীয় মালিকাধীন ও পরিচালিত বিমানের জন্য পাকিস্তান নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় ইতোমধ্যে ভারতের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির এক জরুরি বৈঠকের পর ভারতীয় বিমান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে এবং এটি বাণিজ্যিক ও সামরিক উভয় ধরনের বিমানের ওপর প্রযোজ্য।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ ভারতীয় বিমান পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে। এগুলোর বেশিরভাগই দিল্লি, মুম্বাই, অমৃতসর এবং আহমেদাবাদ থেকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকাগামী দীর্ঘপথের ফ্লাইট।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের মাত্র একটি পূর্বমুখী ফ্লাইটে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে। চীনগামী এই ফ্লাইটটি পাকিস্তান সহজেই বিকল্প পথে চালাতে সক্ষম। এদিকে পাকিস্তান আগেই তার পূর্ব এশিয়া সংক্রান্ত বিমান চলাচল হ্রাস করেছিল, তাই এই সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের ওপর প্রভাব প্রায় নেই বললেই চলে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভারতের বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিপাকে পড়ে। এয়ার ইন্ডিয়ার টরন্টো-দিল্লি ফ্লাইটকে কোপেনহেগেনে থামতে হয় জ্বালানি নেওয়ার জন্য। প্যারিস ও লন্ডন থেকে উড্ডয়নকৃত বিমানেরও আবুধাবিতে অপ্রত্যাশিতভাবে থামতে হয়েছে। শারজাহ থেকে অমৃতসরগামী ফ্লাইট পাকিস্তানে প্রবেশের আগেই ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, অনেক বিমানকেই আহমেদাবাদে অবতরণ করতে হয়েছে অতিরিক্ত জ্বালানির জন্য।
এর আগে ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ ও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পরেও পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে একই রকম আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল এবং প্রতিবারই এতে ভারতেরই বেশি ক্ষতি হয়েছে।
২০১৯ সালে পাকিস্তান শুধু ভারতীয় বিমান নয়, এমনকি ভারতগামী বিদেশি বিমানগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল।
পাকিস্তানের ফেডারেল তথ্য মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধের ফলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো কোটি কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়বে।
সম্প্রতি ভারতীয় অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। পাকিস্তান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে একে ‘তুচ্ছ’ ও ‘যুক্তিহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
এই ঘটনার জেরে দ্রুত ও বড় পরিসরের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। পাশাপাশি দুই দেশ তাদের উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক একাধিক চুক্তি স্থগিত করেছে।
একে অপরের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশের সঙ্গে পণ্য পরিবহন ও বাণিজ্য পথও বন্ধ করা হয়েছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে যে স্বল্পসংখ্যক যোগাযোগের পথ অবশিষ্ট ছিল, সেটিও কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
More Stories
আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্তে বিএনপি আনন্দিত বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার এক...
সর্বকালের সেরা বিদ্যুৎ ‘চোর’ সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিপু: সিদ্দিকী নাজমুল
হোম আজকের সর্বশেষ খবর বিশেষ সংবাদ করোনাভাইরাস সম্পাদকীয় জাতীয় রাজধানী সারাদেশ রাজনীতি বিশ্ব সংবাদ খেলা বিনোদন অর্থনীতি টেক শিক্ষা স্বাস্থ্য...
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রকে দুটি চিঠি দেবে বাংলাদেশ
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা জানাতে আগামী ৪৮...
আগামী এক দশকের মধ্যে পঞ্চগড়ের একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন : সারজিস
আগামী এক দশকের মধ্যে পঞ্চগড়ের একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। শুক্রবার...
১৫ বছর একটি দস্যু পরিবারের শাসন ছিল: গার্ডিয়ানকে ড. ইউনূস
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ এবং সেসময় দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...
শেখ হাসিনার শাসনামলের নৃশংসতা নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ ড. ইউনূসের
ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত সকল নৃশংসতার সঠিক নথিভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।...