Read Time:5 Minute, 33 Second

এখনই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপি সর্বোচ্চ ৪১.৭ শতাংশ ভোট পেতে পারে বলে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং বাংলাদেশের জরিপে উঠে এসেছে।

শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। এতে জানানো হয়, জরিপ কাজে সহযোগিতা করেছে ব্রেন (BRAIN) এবং মুক্তচিন্তার প্ল্যাটফর্ম ‘ভয়েস ফর রিফর্ম’। চলতি বছরে সারাদেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলায় ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত ১০ হাজার ৬৯৬ জন এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।

জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, এখনই ভোট হলে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জামায়াতে ইসলামী পাবে ৩১.৬ শতাংশ ভোট। তৃতীয় স্থানে আওয়ামী লীগ ১৩.৯ শতাংশ। আর ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ৫.১ শতাংশ ভোট।

এ ছাড়া, জরিপের ফল অনুযায়ী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২.৬ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ১ শতাংশ, গণঅধিকার পরিষদ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ, গণসংগতি আন্দোলন শূন্য দশমিক ২ শতাংশ এবং অন্যান্য দল ৩.৩ শতাংশ ভোট পাবে।

জরিপের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জেনারেশন এক্স ও বুমার প্রজন্মের ৪৭% ভোটার বিএনপিকে সমর্থন করছেন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ৩৫% জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দলটি জেনারেশন জি-এর ৩৪% ভোটারের সমর্থন পেয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে রক্ষণশীল দল হিসেবে পরিচিত হলেও জামায়াত তরুণদের মধ্যেও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জরিপ থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে, গ্রাম ও শহরের ভোটারদের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের জনপ্রিয়তায় কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপি গ্রামাঞ্চলে ৪২% এবং শহরে ৪০% ভোটারের সমর্থন পেয়েছে, যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। অন্যদিকে, জামায়াত গ্রামে ৩২% ও শহরে ৩০% ভোটারের সমর্থন পেয়েছে।

লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিএনপির সমর্থন পুরুষ ও নারীদের মধ্যে প্রায় সমান। দলটি পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ৪২% এবং নারী ভোটারদের মধ্যে ৪১% সমর্থন পেয়েছে। তবে, জামায়াতে ইসলামী পুরুষদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়, যেখানে দলটি ৩৩% পুরুষ এবং ৩০% নারী ভোটারের সমর্থন পেয়েছে।

জরিপের অংশ নেওয়া ৫৮ দশমিক ১৭ শতাংশ ভোটার ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন চান। তাদের মধ্যে ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ ভোটার জুনের মধ্যে এবং ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়ার পক্ষে। ১০ দশমিক ৯ শতাংশ ডিসেম্বরের পর নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে জরিপে অংশ নেওয়া মাত্র ৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন আছে। আর ৫ দশমিক ৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

কাকে ভোট দেবেন এমন প্রশ্নে ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার এখনো সিদ্ধান্ত নেননি যে তারা কাকে ভোট দেবেন। তাদের মধ্যে ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ বলছেন যে তারা প্রার্থী সম্পর্কে জানার পর সিদ্ধান্ত নেবেন। আর ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ ভোটার রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চান। এক্ষেত্রে নারী ভোটারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বেশি (৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ)। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই হার ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন ইনোভিশন কনসালটিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ স্পিকসর প্রধান মো. রুবাইয়াৎ সারওয়ার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনোভিশন কনসালটিং বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী শাহেদ এইচ ফেরদৌস, ইনোভিশনের প্র্যাকটিস এরিয়া লিড আবদুর রব ও বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post কোনো কোনো রাজনৈতিক দল মুসিবত হয়ে আসার চেষ্টা করছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ
Next post পাঁচ দেশ ও কেম্যান আইল্যান্ডসে শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে
Close