Read Time:4 Minute, 25 Second

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাদের ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রী বিচার চেয়ে সমন্বয়কদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন।

ওই ছাত্রী বলেন, গত ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চাষাঢ়া গোলচত্বর থেকে ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা ২০-২৫ জন ছিল। তারা আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে তোলারাম কলেজের পাশে তাদের একটি অফিসে নিয়ে যায়। তারা আমার ফোন কেড়ে নেয়, অনেক বাজে কথা শোনায় এবং গালি দেয়। একপর্যায়ে সবাই অফিস থেকে চলে যায় শুধু দুজন থাকে। সে দুজন আমাকে ধর্ষণ করে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা নিয়ে ছবি ও তথ্যচিত্রের আর্কাইভ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া ওই ছাত্রী।

তার দাবি, এই ঘটনা সমন্বয়ক থেকে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় সবাই জানত। অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার মেলেনি। কেউ গুরুত্ব সহকারে দেখেনি বিষয়টি। যে দুই লোক ধর্ষণ করেছে তারা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের কোনো শাস্তি হয়নি।

তিনি অভিযোগ করেন, আমি যখন সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা আপুকে বিষয়টি জানাই তিনি বলেন, তোমার সাথে অনেক খারাপ হয়েছে। তারপর এ বিষয়টা ক্লোজ করে দেন।

আমি যখন বিষয়টি সমন্বয়ক নুসরাত তাবাচ্ছুম আপুকে জানাই তিনি বলেন, তুই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস। পরে তাকে নক দিলে তিনি মেসেজ সিন করেননি, অভিযোগ ওই ছাত্রীর।

তার দাবি, সারজিস প্রথম থেকেই বিষয়টি জানতেন। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাদের শাস্তির আওতায় আনারও আশ্বাস দেন। কিন্তু কিছুই করেননি।

ওই শিক্ষার্থী জানান, নভেম্বরের ১০ তারিখে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ৩১ ডিসেম্বর তার গর্ভপাত হয়।

এদিকে সমন্বয়ক নুসরাত তাবাচ্ছুম এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ওই ছাত্রীকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা সব কিছুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু, কিন্তু তার অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না।

এ ছাড়াও এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সামাজিক আন্দোলনকর্মী মহিউদ্দিন রনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ৬ মাস পর, জনতার জন্য ক্ষমতা নাকি ক্ষমতার জন্য জনতা এখন এই প্রশ্নগুলো বারবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। আর কত প্রাণ দিতে হবে বিচার পাওয়ার জন্য?

মহিউদ্দিন রনি আরও লিখেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিচারের দাবি না তুলে কি নিয়ে আলাপ করে? দলগুলোর প্রতিনিধিরা মাইকের সামনে যে বলে জনতা নির্বাচন চায়, নির্বাচন চায়। কেউ কি বলে না জনতা শহীদ, গাজীদের জন্য বিচার চায়, এই বোনের ধর্ষকদের বিচার চায়।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post দুই সদস্যের অপরিচিত একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে: ট্রাম্প
Next post একটি গোষ্ঠী আন্দোলনকে ‘হাইজ্যাক’ করে ক্ষমতায় বসেছে: আমীর খসরু
Close