Read Time:5 Minute, 1 Second

২০১৩ সালে দেওয়া হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি মেনে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুফতি এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী। তিনি বলেছেন, ‘সরকারকে বলছি, হেফাজতের ১৩ দফা মেনে নিতে হবে। নতুবা আরেকটা বিপ্লব হবে এবং সেটা হবে সশস্ত্র বিপ্লব।’

শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে এক সমাবেশে এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী এ কথা বলেন। এর আগে তিনি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটেও বক্তব্য দেন।

এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘যাঁরা ইসলামি রাজনীতির ব্যানারে আন্দোলন করেন, আপনাদের বাংলাদেশের মানুষ চিনেছে শাপলা চত্বর থেকে। অসংখ্য আলেমের রক্তের ওপর পা দিয়ে আপনারা নেতৃত্ব পেয়েছেন। অতএব আপনারা যদি বর্তমান সরকারের সুযোগ-সুবিধা নেন, আপনাদের বয়কট করা হবে। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, জাতীয়তাবাদী—সব দল তাদের বয়ান দিয়েছে, আপনাদের বয়ান কোথায়।’

ইসলামি দলগুলোর উদ্দেশে এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘আমরা শুনতে চাই, ক্ষমতায় গেলে হেফাজতের ১৩ দফার অন্তত ৩টি দফা আপনারা পূরণ করবেন, তার ওয়াদা দিতে হবে। প্রথমে কুখ্যাত কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। নাস্তিকদের শায়েস্তা করতে ব্লাসফেমি আইন করতে হবে। ভারতের তাঁবেদারি চলবে না, যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদারি করা যাবে না।’

এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে ব্লগারদের হত্যার দায় দিয়ে আমাদের নিরীহ ছাত্র ভাই আলেমদের বছরের পর বছর কারাগারে রেখেছে। তাঁরা এখনো মুক্তি পাননি, আমি ফারাবিসহ যাঁরা কারাগারে আছেন, তাঁদের মুক্তি চাই। তা না হলে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।…প্রয়োজনে আমরা “মার্চ টু আদালত” শুরু করব।’

এর আগে জুমার নামাজের পরপরই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর প্রাঙ্গণে ‘তাওহিদি ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী। ‘আল্লাহ ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধে ফেসবুকে ও কবিতায় অবমাননার দায়ে’ রাখাল রাহা ও সোহেল গালিবের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

জুমার নামাজের পর একটি মিছিল বায়তুল মোকাররম থেকে বের হয়ে পুরানা পল্টন, প্রেসক্লাব ঘুরে বায়তুল মোকাররমের পাশ দিয়ে শাপলা চত্বরে যায় এবং সেখানে সমাবেশ হয়। সমাবেশে ‘ইসলামিক রিভাইভাল ফ্রন্ট’ নামে প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। এ ছাড়া ‘বাংলাদেশ তিসরি ইনসাফ দল’-এর ব্যানারেও অনেকে অংশ নেন।

এনায়েতউল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘বাক্‌স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী যে-ই কথা বলবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের হাতের স্বাধীনতাও চালু করে দেব। তখন আবার আমাদের চরমপন্থী বলবেন না।’

শাপলা চত্বরের সমাবেশে ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান বলেন, ‘শাপলা চত্বর থেকে আমরা প্রত্যয় ব্যক্ত করতে পারি, বাংলার জমিনে আল্লাহর শানে কটূক্তিকারী, নবীর (সা.) শানে কটূক্তিকারী কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব রাখব না ইনশা আল্লাহ। এই বাংলায় এটা ঘটুক, আমরা চাই না। আমরা চাই, আমাদের কর্তৃপক্ষ, আমাদের প্রশাসন, আমাদের সরকার, তারা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে আইনের মাধ্যমে এর দ্রুত বিচার করবে।’

সমাবেশে রাখাল রাহা (সাজ্জাদুর রহমান) ও সোহেল গালিবের শাস্তির দাবিসহ ‘তাওহিদি ছাত্র-জনতা’র পক্ষে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন ইসলামি লেখক ও গবেষক আহমদ রফিক।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post লিবিয়ায় পাচারের পর নির্যাতন, ‘মৃত্যুকূপ’ থেকে ফিরলেন ৫ বাংলাদেশি
Next post দুই সদস্যের অপরিচিত একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে: ট্রাম্প
Close