Read Time:5 Minute, 1 Second

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উদ্বেগের কথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াশিংটনে দুই নেতার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি এ তথ্য জানান।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্বেগের কথা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরেছেন। ভারত খুব সতর্কতার সঙ্গে এ ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছে। বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান মিশ্রি।

সংবাদ সম্মেলনের সময় এক ভারতীয় সাংবাদিক ডিপ স্টেট প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চান। সাংবাদিকটি প্রথমে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে হিন্দিতে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন। এরপর ট্রাম্পের উদ্দেশে ইংরেজিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান।

ট্রাম্পকে ওই সাংবাদিক বলেন, আপনি বাংলাদেশ বিষয়ে কী বলতে চান? কেননা আমরা দেখেছি এবং এটা স্পষ্ট যে, বাইডেন প্রশাসনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপ স্টেট ক্ষমতার পরিবর্তনে জড়িত ছিল; এরপর জুনিয়র সরোসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। সুতরাং বাংলাদেশের বিষয়ে আপনার অভিমত কী?

উত্তরে ট্রাম্প বলেন, সেখানে কথিত ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটা এমন একটা বিষয়- যেখানে প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এরপর নরেন্দ্র মোদীর দিকে ইঙ্গিত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, স্পষ্ট করে বললে, ভারত সেখানে শতশত বছর ধরে কাজ করেছে, আর সেসব বিষয় তিনি পড়েছেন।

তবে বাংলাদেশের বিষয় আমি প্রধানমন্ত্রীর উপর ছেড়ে দেব, বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইশারা দেন ট্রাম্প। এরপর নরেন্দ্র মোদী উত্তর দিতে গিয়ে ইউক্রেইনে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরলেও বাংলাদেশ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

পরে ব্রিফিংয়ে আসা ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ট্রাম্পের বক্তব্যকে দিল্লি কীভাবে ব্যাখ্যা করছে এবং বাংলাদেশের বিষয়ে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব মিশ্রি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা ট্রাম্পের কাছে কথা তুলে ধরার কথা জানান ভারতীয় এ কর্মকর্তা।

মিশ্রি বলেন, আমরা আশা করি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন দিকে এগিয়ে যাবে- যেখানে আমরা তাদের সঙ্গে গঠনমূলক ও স্থিতিশীল পথে সম্পর্ক চালিয়ে নিতে পারব। এক্ষেত্রে কিছু উদ্বেগ রয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে সেসব বিষয়ে অভিমত তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী।

ডিপ স্টেট বা ছায়া রাষ্ট্র বলতে সাধারণত অনির্বাচিত সরকারি কর্মকর্তা ও প্রাইভেট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কথিত গোপন নেটওয়ার্ককে বোঝানো হয়ে থাকে, যারা বেআইনিভাবে সরকারি নীতিতে প্রভাব বিস্তার ও তা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Previous post ড. ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ইলন মাস্ক, পাশেই ছিলেন ট্রাম্প
Next post শেখ হাসিনার বিচার না করলে মানুষ আমাদের ক্ষমা করবে না : ড. ইউনূস
Close