দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। আজ বুধবার দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তায় পূর্বাচল প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোন থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, এই বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপান্তি।
শেখ হাসিনা ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০০৯) বরাদ্দ পেয়েছেন। ২০২২ সালের ৩ অগাস্ট তার নামে রাজউক প্লটের বরাদ্দপত্র দেয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় (প্লট নম্বর ০১৫) এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও (প্লট নম্বর ০১৭) ১০ কাঠা করে প্লট পেয়েছেন।
জয়ের বরাদ্দপত্র ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর দেওয়া হয় এবং ১০ নভেম্বর মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। পুতুলের বরাদ্দপত্র দেওয়া হয় ওই বছরের ২ নভেম্বর।
শেখ রেহানাও ১০ কাঠার প্লট (প্লট নম্বর ০১৩) বরাদ্দ পেয়েছেন। তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (প্লট নম্বর ০১১) এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের (প্লট নম্বর ০১৯) নামেও একই পরিমাণের প্লট বরাদ্দ হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর শেখ হাসিনার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আসা অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় হাই কোর্ট।
একইসঙ্গে এ কমিটিকে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে (২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে) রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগও তদন্ত করতে বলা হয়।
মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আমরা পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি, যা ক্ষমতার অপব্যবহারের স্পষ্ট প্রমাণ দিচ্ছে। অনুসন্ধান দল প্রতিবেদন জমা দিলে আমরা বিস্তারিত জানাব। তবে শিগগিরই ভালো কিছু তথ্য আমরা প্রকাশ করতে পারব।’
এর আগে ২২ ডিসেম্বর, শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ৩০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা) বিদেশে পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
দুদক জানায়, অনুসন্ধান চলমান এবং এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এখনই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে উল্লেখ করেন মহাপরিচালক।
উল্লেখ্য, ছাত্র আন্দোলনের চাপে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করেন।
More Stories
লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল
যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) ক্লিনিকে ভর্তির...
ঢাকায় ইউরোপীয় দেশগুলোর ভিসা সেন্টার খোলার চেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলো যাতে ভিসা সেন্টার খোলে, সেই চেষ্টা চলমান আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল...
উপদেষ্টা মাহফুজ: সরকার নয়, ঘোষণাপত্র আসবে শিক্ষার্থী ও সব পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকার কোনো ঘোষণাপত্র দেবে না। এটি...
শেখ হাসিনাকে ফেরত: দিল্লির জবাবের জন্য আরও অপেক্ষা করবে ঢাকা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। এ...
শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে পাঠানো চিঠির জবাব এখনও দেয়নি ভারত
ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বুধবার (৮...
লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া
প্রফেসর প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় রাত...